সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায় ফের পেছালো

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় ৩৪ বছর আগে দুষ্কৃতিকারীদের গুলিতে সগিরা মোর্শেদ সালাম (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৩ মার্চ ধার্য করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালতে মামলাটির রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য ছিল। তবে এদিন সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক ছুটিতে থাকায় রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৩ মার্চ ধার্য করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. মেহেদী হাসান এতথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ ঠিক করেছিলেন আদালত। তবে ওই দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেন আদালত। মামলার আসামিরা হলেন- আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান (৫৯), ডা. হাসান আলী চৌধুরী (৭০) ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদ ওরফে শাহীন (৬৪) এবং মারুফ রেজা ও মন্টু মন্ডল।

মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ৫৭ জন সাক্ষীর ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতের জিআর শাখায় এ চার্জশিট জমা দেন। ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। সগিরা মোর্শেদের বিয়ে নিয়েও ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সগিরার কাজের মেয়েকে মারধর করেন আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন হাসান আলী চৌধুরীর স্ত্রী শাহীন। আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে অন্য আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন। চুক্তি করা ২৫ হাজার টাকার মধ্যে মারুফ রেজাকে ১৫ হাজার টাকা দেন হাসান আলী। ১০ হাজার টাকা পরে দেওয়ার কথা বললেও আর দেননি।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকাল ৫টার দিকে সগিরা মোর্শেদ সালাম (৩৪) বাসা থেকে বের হয়ে তার দ্বিতীয় শ্রেণিপড়ুয়া বড় মেয়ে সারাহাত সালমাকে বাসায় আনতে স্কুলের দিকে যাচ্ছিলেন। স্কুলের সামনে পৌঁছামাত্রই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা তার হাতের বালা ধরে টান দেয়। বালা দিতে অস্বীকার করায় সগিরাকে গুলি করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.