ঋণের সুদহার তুলে দেয়ার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে: বাংলাদেশ ব্যাংক

গভর্নরের সঙ্গে বিএবি’র বৈঠক

বাংলাদেশ ব্যাংকের বেধে দেয়া ঋণের ৯ শতাংশ সুদহার কিছু কিছু ক্ষেত্রে তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (২০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে বিএবির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বিএবি মূলত নতুন গভর্নরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছেন। তারপরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যে প্রেক্ষাপটে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ করা হয়েছিল সেটার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পর্যালোচনার অনুরোধ করেছেন তারা। তারা বলেছে, শিল্প ঋণ, উৎপাদনশীল খাত, রপ্তানি সংশ্লিষ্ট খাতের ঋণে ৯ শতাংশ সুদ ঠিকই আছে। তবে, এখন মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ব্যক্তি ঋণের সুদহার পর্যালোচনার দাবি করেছেন তারা। এছাড়া বিলাসজাতীয় পণ্যে যে ঋণ দেয়া হয় সেসব ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদের সীমা বাড়ানো যায় কিনা সে বিষয়টিও তারা বিবেচনা করতে বলেছেন।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে গভর্নর বলেছেন মূল্যস্ফীতি দুইভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক, সুদহার বাড়িয়ে, দুই, করহার বাড়িয়ে। করের বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। আর সুদহারের ক্ষেত্রে বিএবি যে প্রস্তাব দিয়েছে সেটা পর্যালোচনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ পুনঃতফসিলের যে ফাইল আগে আসত সেগুলো এখন আর আসবে না। ফাইল এলে সিদ্ধান্ত দিতে অনেক সময় লাগত। ব্যাংক নিজেরা সেটা করতে পারবে – এ সিদ্ধান্তকে বিএবি সাধুবাদ জানিয়েছে।

এ সময় বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ঋণ পুনঃতফসিল বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ওপর ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তের ফলে সবার মঙ্গল হবে। তিনি বলেন, নতুন গভর্নর ঋণ পুনঃতফসিলের ভার ব্যাংকের উপর দিয়েছেন। এতে খেলাপি ঋণ কমে আসবে।

তিনি বলেন, এটা ব্যাংকের হাতে দিয়ে দেয়ার ফলে আমাদের পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। একইসঙ্গে ব্যাংকের কর্ম ও রিকভারি অনেক বেড়ে যাবে। এখন যার যার ব্যাংক সে কন্ট্রোল করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হবে না। ব্যাংক নিজেই ঋণ পুনঃতফসিল করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকের জবাবদিহিতা বেড়ে যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই জবাবদিহিতা বাড়বে। যারা অমান্য করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটাকেও আমরা স্বাগত জানাই।

ব্যাংকাররা শাস্তির বিষয় মেনে নেবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএবি চেয়ারম্যান বলেন, কেন মেনে নেবে না?  আমরা মেনে নিয়েছি, ব্যাংকাররাও মেনে নেবে। কোনো ব্যাংক অন্যায়-অপরাধ করলে শাস্তির আওতায় আসা উচিত। সেক্ষেত্রে এই প্রজ্ঞাপন যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.