আরও ২৩ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব তলব

২৩ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, কিউকমের পর এবার এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে দারাজ ডটকম ডটবিডি ও এর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আলিবাবা, প্রিয়শপ ডটকম, গেজেট মার্ট ডটকম, ব্রাইট হ্যাশ, ওয়াল মার্ট, আকাশনীল, বাড়িদোকান ডটকম, টিকটিকি, ইনফিনিটি মার্কেটিং লিমিটেড, এনেক্স ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও অ্যামস বিডির মতো প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় লেনদেন তথ্য চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে এই ১১টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় লেনদেনের তথ্য পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়। দেশের সবগুলো ব্যাংকে আজ মঙ্গলবার (০৩ অক্টোবর) এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বিএফআইইউর চিঠিটি পাঠানো হয় বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

লেনদেনের তথ্যের পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকাও দিয়েছে বিএফআইইউ। এসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের তথ্যও বিএফআইইউতে পাঠাতে বলা হয়।

অ্যামস বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আশেকুল ইসলাম তানজীল, চেয়ারম্যান কায়সার হাবিব, পরিচালক মো. আবদুর রউফ বারেক, আহনাফ তাসমিদ নাহিয়ান ও মো. কামরুজ্জামানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, ইনফিনিটি মার্কেটিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, এনেক্স ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী রিমন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার আলী, পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. ফিরোজ আলম, ওয়ালমার্টের এমডি শেখ ফরিদ আহম্মদ, ব্রাইট হ্যাশের স্বত্বাধিকারী মো. সালেকিন, প্রিয়শপের আশিকুল আলম খানসহ অন্যান্য ব্যক্তি, আকাশনীলের এমডি মসিউর রহমান ও পরিচালক ইফতেখার উজ জামান রনি এবং গেজেট মার্ট ডটকমের হারুন অর রশিদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় লেনদেনের তথ্যও চাওয়া হয়েছে।

তবে দারাজের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের তথ্য না চেয়ে কেবল আলিবাবা ডটকমের লেনদেনের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ। বাড়িদোকান ডটকম ও টিকটিকির সঙ্গে জড়িত কোন ব্যক্তির নামে চিঠি পাঠানো হয়েছে তা উল্লেখ করেনি বিএফআইইউ। কেবল দুটি ঠিকানা সরবরাহ করা হয়েছে। বাড়িদোকানের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- দয়ালের মোড়, নওগাঁ আর টিকটিকির ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- শপ নম্বর ২৫, রহমানিয়া সুপার মার্কেট, উত্তরা।

বাংলাদেশ ডিল এবং এ কোম্পানির ফারজানা কবির ইশিতা ও ফিদা মাহমুদ আশফাক। স্বাধীন ও এর পরিচালক শাদমান ওয়াই, শামীরা ও ডেডরিক ভ্যান ওম্মেরেন এবং শেরেস্ত ডটকম ও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান ইমরান রাসেল, পরিচালক মো. শামীম রেজা, ইরফান হোসাইন, জুনায়েদ হোসাইন, রাহাত হোসাইন চৌধুরী ও শেখ আহমেদ। আস্থার প্রতীক ও এর মালিক রুশো তালুকদার, টিকটিকি, শপ আপ ই-লোন, বাড়ি দোকান ডটকম, ই-শপ ইন্ডিয়া, বিডি লাইক, সান টিউন, চলন্তিকা, সুপম প্রোডাক্ট এবং নিউ নাভানা।

গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিন গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা তালিকা দেওয়া হয় বিএফআইইউ’কে। সেসব কালো তালিকায় দারাজসহ নতুন করে এই ২৩টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব এবং লেনদেনের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ। প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাকাউন্টের লেনদেন, গ্রাহকদের পাওনা, অ্যাকাউন্টে জমার পরিমাণসহ বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে আগামী ১১ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দেওয়া হবে। গ্রাহকদের অর্থ ফেরতসহ বিভিন্ন বিষয়ে সেখানে আলোচনা হবে।

এর আগে ইভ্যালিসহ ১০টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দারা। ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কালো তালিকায় যোগ হলো এই ২৩ প্রতিষ্ঠান। ফলে কালো তালিকাভুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৩টিতে।

প্রসঙ্গত, উচ্চ ছাড়ে পণ্য বিক্রির কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে অর্ডার নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে পণ্য সরবরাহ না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে পুরো ই-কমার্স খাত। অনেকে গ্রাহক বা মার্চেন্টের অর্থ নিয়ে পালিয়েছে। এর মধ্যে ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, কিউকম, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ, বুমবুম, আদিয়ান মার্ট ও নিডস ডট কম বিডি।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.