করপোরেট ঋণে বেশি ঝুঁকছে ইসলামি ব্যাংকগুলো

করোনা ভাইরাসের প্রকোপের পরও ২০২১ সালে দেশের ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো করপোরেট ঋণে বেশি ঝুঁকেছে। এর ফলে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর তুলনায় ইসলামি ব্যাংকগুলোর সম্পদের ঝুঁকি বেশি বেড়েছে। এসময়ে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর তুলনায় দেশের ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত মান উন্নত হয়েছে।

চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডিস এ তথ্য প্রকাশ করেছে। মুডিস গত সোমবার (০১ নভেম্বর) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে এই হিসাবের আওতায় নেয়নি মুডিস। কারণ, সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর আর্থিক চিত্র বেশ খারাপ।

এতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের ৭৫ শতাংশই গেছে করপোরেট ঋণে, যা পাঁচ বছর আগেও ছিল ৫২ শতাংশ। অন্যদিকে প্রচলিত ব্যাংকগুলো এ ঋণ ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭১ শতাংশে এনেছে। গত পাঁচ বছরে করপোরেট খাতে দ্রুত অর্থায়ন বাড়ানোর কারণে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো সমসাময়িক প্রচলিত ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

অবশ্য গত দুই বছরে নতুন করে প্রচলিত ধারার দুটি ব্যাংক ইসলামি ধারায় রূপ নিয়েছে। ব্যাংক দুটি হলো স্টান্ডার্ড ও গ্লোবাল ইসলামি (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল)।

মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো সম্পদের মানের অবনতি হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। কারণ, তাদের নিরাপত্তা সঞ্চিতি দুর্বল। যদি ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর করপোরেট ঋণ আরও বৃদ্ধি পায়, তাহলে তারা প্রচলিত ব্যাংকগুলোর চেয়ে পিছিয়ে পড়বে। মূলধন উন্নতিতে একই সময়ের ব্যাংকগুলোর তুলনায় আরও পিছিয়ে পড়তে পারে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো।

ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, প্রচলিত ব্যাংকের মতো ইসলামি ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করছে। সে ক্ষেত্রে বড় প্রকল্পে প্রচলিত ব্যাংক যেমন অর্থায়ন করছে, ইসলামি ধারার ব্যাংকও সেই প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে। পাশাপাশি ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো গাড়ি, বাড়ি কেনা ও ব্যক্তিগত ঋণে তেমন নজর নেই, কৃষি ও এসএমই খাতেও গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই করপোরেট ঋণে ঝুঁকছে। ইসলামি ব্যাংকগুলোর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো তদারকি নেই। এই কারণে বেশি ঝুঁকি নিচ্ছে ইসলামি ব্যাংকগুলো।

দেশের ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে বর্তমানে ইসলামি ধারার ব্যাংক ১০টি। এগুলো হলো ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, আল-আরাফাহ্, সোশ্যাল ইসলামি, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, আইসিবি ইসলামিক, শাহজালাল ও এক্সিম ব্যাংক। নতুন করে ইসলামি ধারার ব্যাংক হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ও এনআরবি গ্লোবাল।

অর্থসূচক/মৃত্তিকা সাহা/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.