অভিজিৎ হত্যা: যে কারণে ফাঁসি হয়নি ফারাবীর

ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) পাঁচ সদস্যের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এবিটির আরেক সদস্য শফিউর রহমান ফারাবির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ফারাবীর মৃত্যুদণ্ড না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

আদালত পাঁচ আসামিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ সালের ৬(২)(অ) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই ধারাতে ফারাবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এই ধারায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে রায়ে বলা হয়েছে, আসামি শফিউর রহমান ফারাবী এই মামলায় কোনো দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। আসামি আবু সিদ্দিক সোহেল, আরাফাত রহমান সিয়াম এবং মোজাম্মেল হুসাইন সায়মন তাদের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি শফিউর রহমান ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি।

অভিজিৎ রায়কে অনুসরণ কিংবা বইমেলায় রেকি করাসহ কোনো অভিযোগই শফিউর রহমান ফারাবীর বিরুদ্ধে নেই। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, আসামি শফিউর রহমান ফারাবীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ এর ৬(২)(অ) ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

তবে ফারাবী ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়ে অভিজিৎ রায়ের নামে লেখালেখি করে। এসব স্ট্যাটাস পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয় যে, অভিজিৎ রায়কে নাস্তিক ব্লগার হিসেবে আখ্যা দেওয়ার বিষয়ে আসামি শফিউর রহমান ফারাবীর সঙ্গে অন্য পাঁচ আসামির অভিন্ন মিল রয়েছে। অভিজিৎকে রায়কে নাস্তিক ব্লগার হিসেবে আখ্যা দেওয়ায় এবং অভিজিৎ রায় তার স্ত্রী ও মেয়ের ছবি আপলোড করে অভিজিৎ রায়কে হত্যার জন্য উন্মুক্ত আহ্বান করায় সুষ্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, অভিযুক্ত পাঁচজন শফিউর রহমান ফারাবী দ্বারা প্ররোচিত হয়ে অভিজিৎ রায়কে হত্যার অভিন্ন অভিপ্রায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে এবং মূল হামলাকারীদের দিয়ে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করেছে।

আসামি শফিউর রহমান ফারাবী ফেসবুক অভিজিৎ রায়, তার স্ত্রী ও মেয়ের ছবি আপলোড করে অভিজিৎ রায়কে চিনিয়ে দিয়ে মূল খুনিদের সহায়তা করেছে। তাই ফারাবীকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(অ) ধারায় সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার), আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ও মো. আরাফাত রহমান।

তাদের মধ্যে মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির শুরু থেকেই পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.