গাজার হাসপাতালে হামলায় হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইসরাইল

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় হামলা চালাতে ইসরাইল আমেরিকায় তৈরি এজিএম-১১৪আর৯এক্স হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার দখলদার ইসরাইলি সেনাদের ওই হামলায় হাসপাতালের বেশ কয়েকজন রোগী হতাহত হয়েছেন।

রোগী, চিকিৎসক ও আশ্রয় গ্রহণকারী অন্তত ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি আল-শিফা হাসপাতালে অবস্থান করছেন। আগে থেকে একথা জানা সত্ত্বেও গত শুক্রবার রাতে প্রথম ওই হাসপাতালে হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা। এরপর রোববারও হাসপাতালটিতে হামলা হয়।

মার্কিন সামরিক সূত্র প্রেসটিভিকে জানিয়েছে, গত শুক্রবার রাতের হামলায় আমেরিকায় তৈরি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকটি অনলাইন সূত্রও একথার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। হেলফায়ার এমন একটি প্রাণঘাতী ক্ষেপণাস্ত্র যা বিস্ফোরিত না হলেও এর ঘূর্ণায়মান ব্লেডের কারণে এটি তিন ফুট দূরত্বের মধ্যে যে কারো শরীর কেটে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।

এই ক্ষেপণাস্ত্র দেড় কিলোমিটার থেকে শুরু করে ৮ কিলোমিটার দূরত্বের যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে নিক্ষেপ করা সম্ভব। হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি, সাগর কিংবা আকাশ থেকে নিক্ষেপ করা যায়। গাজার আল-শিফা হাসপাতালে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানোর কাজে এমকিউ-১, এমকিউ১সি এবং এমকিউ-৯ ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন সামরিক বাহিনীর একজন বিশ্লেষক প্রেস টিভিকে বলেছেন, হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ড্রোন থেকে নিক্ষেপ করে বেশি সুবিধা পাওয়া যায় এবং শিফা হাসপাতালে হামলার ধরন দেখে বোঝা যায়, সেখানে হামলার কাজে ড্রোনই ব্যবহার করা হয়েছে।

ওই মার্কিন সামরিক বিশ্লেষক আরও বলেন, যুদ্ধবিমান থেকেও ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা সম্ভব। কিন্তু যুদ্ধবিমান থেকে হামলা করতে হলে বিমানটিকে অনেক নীচে নেমে আসতে হতো; ফলে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের গুলিতে বিমানটির ভূপাতিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কাজেই ক্ষেপণাস্ত্রটি যেমন আমেরিকায় তৈরি তেমনি এটি নিক্ষেপ করার কাজেও মার্কিন ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্রের দাম এক লাখ ৫০ হাজার ডলার বলে তিনি জানান।

এক মাসের বেশি সময় আগে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলের ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আল-শিফা হাসপাতালের উপর বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছে। হাসপাতালটির মহাপরিচালক মোহাম্মাদ আবু সালমিয়া বলেছেন, ইসরাইল গাজার হাসপাতালগুলো এবং স্বাস্থ্য খাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। শুক্রবার রাতে হাসপাতালটির আউটডোর ক্লিনিক ভবন এবং প্রসূতি বিভাগে হামলা করে দখলদার সেনারা। পার্সটুডে

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.