ব্যাংক খাতে এক বছরে তারল্য কমেছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা

আমদানিতে বেশি ব্যয় হওয়া’সহ তিন কারণে ব্যাংকিং খাতে তারল্য কমছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়া দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট তারল্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে তারল্য কমেছে ৫৪ হাজার ৭০১ কোটি টাকা।

সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতে তারল্য পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার বিধিনিষেধ কমার ফলে অর্থনীতির জোরালো কর্মকাণ্ডে ঋণ বেড়েছে। দ্রব্যের দাম বাড়ায় আমদানিতে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদেশি মুদ্রা বিশেষ করে ডলার কিনছে ব্যাংকগুলো। এতে ব্যাংক ব্যবস্থায় থাকা তারল্য বা নগদ টাকার পরিমাণ কমে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়া দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট তারল্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে তারল্য কমেছে ৫৪ হাজার ৭০১ কোটি টাকা।

এবিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন অর্থসূচককে বলেন, তারল্য কমার সবচেয়ে বড় কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার বিক্রি। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো মার্কেটে অনেক তারল্য দিচ্ছে। নতুন নতুন রি-ফাইন্সিং স্কিম চালু হচ্ছে। এর মাধ্যমেও তারল্য যোগ হচ্ছে। এ পর্যন্ত সরকারের বাজেট ঘাটতির পুরোটা বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থায়ন করছে। রি-ফাইন্সিং স্কিম কোনো সমস্যা তৈরি করবে না। তবে টাকা ছাপিয়ে বাজেট ঘাটতিতে অর্থায়ন করলে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।

এর তিন মাস আগে সেপ্টেম্বর শেষে এ অঙ্ক ছিল ৪ লাখ ৪ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে তারল্যের পরিমাণ কমেছে ২১ হাজার ১০৫ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শরিয়াহভিত্তিক কয়েকটি ইসলামি ব্যাংকে বড় ঋণ বিতরণের অনিয়ম প্রকাশ পায়। এতে ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের ব্যাপকহারে টাকা তুলে নেয়। এমন পরিস্থিতিতে তারল্যে টান পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাত ইসলামি ব্যাংক টাকা ধার নেয়।

এদিকে সরকারের নির্দেশনা মেনে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সম্প্রতি ঋণের সুদে বেঁধে দেওয়া এই হার তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

অর্থসূচক/সুলাইমান/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.