দশদিনে ৬৮ কোটি ডলার পাঠালো প্রবাসীরা

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা করোনার পরে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো। তবে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সবকিছু আবার থমকে যায়। এতে দেশে ব্যাপকহারে ডলার সংকট দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে রেমিট্যান্স বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছরের প্রথম দিকে প্রবাসী আয় বেড়েছিলো। এরপরে তা আবারো কমতে থাকে। চলতি মার্চ মাসের প্রথম ১০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৮ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, মার্চ মাসের প্রথম ১০ দিনে মোট ৬৮ কোটি ২৩ লাখ মার্কিন ডলার এসেছে দেশে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮ কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। তবে আগামীতে দুইটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারনে রেমিট্যান্স বেশি পরিমাণ আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে ডলার সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার বিক্রি করেছে। দেশের ইতিহাসে পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এতো পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। মূলত জরুরি আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে এসব ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলার করে এলেও পরের মাস থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি চলে আসে। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। জানুয়ারি মাসে এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। আর সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১.০৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.