জীবন পেয়ে লিটনের হাফ সেঞ্চুরি

আগের দিনের বিনা উইকেটে ৭ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ভারতকে টেক্কা দিতে দিনের প্রথম সেশনটা টিকে থাকার বিকল্প ছিল না দুই ওপেনারের। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসানের জুটি গড়েই উঠতে দিলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ডানহাতি এই স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন শান্ত। রিভিউ নিলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি বাঁহাতি এই ওপেনার। প্রথম ইনিংসে ২৪ রান করা শান্ত এদিন আউট হয়েছেন মাত্র ৫ রানে।

শান্ত আউট হওয়ার পর জাকিরের সঙ্গে জুটি গড়ার বিকল্প ছিল না মুমিনুল হকের। তবে প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি করতে পারলেন না বাঁহাতি এই ব্যাটার। মোহাম্মদ সিরাজের বলে চার মেরেই শেষ তিনি। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে পান্তের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৫ রান করা মুমিনুল।

মুমিনুল আউট হওয়ার পর জাকিরকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন সাকিব আল হাসান। শুরুতে খানিকটা আক্রমণাত্বক মনোভাব দেখলালেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। জয়দেব উনাদকাটের খানিকটা লাফিয়ে উঠা বলে ক্যাচ উঠেছিল পয়েন্ট ও গালির মাঝে। তবে সেখানে ফিল্ডার না থাকায় বেঁচে যান সাকিব। তবে এক বল পরই আউট হতে হয়েছে বাংলাদেশের অধিনায়ককে। উনাদকাটের লেংথ ডেলিভারিতে শুভমান গিলকে রীতিমতো ক্যাচ অনুশীলন করিয়েছেন তিনি। এক্সট্রা কভারে দাঁড়িয়ে থাকা গিলের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ১৩ রান করা সাকিব।

প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। ব্যর্থতা বজায় থাকলো ঢাকা টেস্টেও। প্রথম সেশন শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে আউট হয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। অক্ষর প্যাটেলের লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাক ফুটে গিয়ে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। তবে বল ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিলেও শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি। ৯ রানে ফিরেন মুশফিক আর রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।

প্রথম সেশনে সাকিব-মুশফিকদের ব্যর্থতার পরও ধৈর্য্যে ধরে টিকে ছিলেন জাকির। লাঞ্চের পর অবশ্য শুরুর দিকে খানিকটা অস্বস্তিতে ছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে দলের বিপদে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুল করেননি তিনি। উমেশ যাদবের স্ট্রেইট ড্রাইভ করে তিন রান নিয়ে ১২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জাকির। প্রথম টেস্টে হাফ সেঞ্চুরিকে তিন অঙ্কে রূপ দিলেও ঢাকায় ব্যর্থ হলেন জাকির। উমেশের অফ স্টাম্পের বেশ খানিকটা বাইরের ডেলিভারিতে কাট করেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। জাকিরের উড়িয়ে মারা সরাসরি চলে যায় ডিপ থার্ডম্যানে থাকা সিরাজের হাতে। তাতে ৫১ রানে ফিরে যেতে হয় তাকে।

জাকিরের বিদায়ের পর লিটনের সঙ্গে জুটি গড়তে পারেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। অক্ষরের বলে অ্যাক্রোস দ্য লাইনে গিয়ে সুইপ করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ৫ বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

দলীয় ১১৩ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বিদায় পর উইকেটে আসেন নুরুল হাসান সোহান। এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী মানসিকতায় খেলতে শুরু করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। লিটন দাসকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু অক্ষর প্যাটেলের বলে স্টাম্পিং হয়ে বিদায় নিতে হয় তাকে। দ্রুতসময়ের মধ্যে লিটনের সঙ্গে ৪৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। ফেরার আগে করেন ২৯ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ৩১ রান।

হাফ সেঞ্চুরি থেকে তখনও ২ রান দূরে লিটন। এমন সময়ে অক্ষরের বলে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে আউট হতে পারতেন ডানহাতি এই ব্যাটার। অক্ষরের বল প্যাডে লাগতেই আউট দেন আম্পায়ার। তবে ততক্ষণাৎ রিভিউ নেন লিটন। রিপ্লেতে দেখা যায় বল স্ট্যাম্প মিস করতো। তাতেই রক্ষা পান। পরের ওভারে অশ্বিনের বলে স্লিপে ক্যাচ ছেড়েছেন বিরাট কোহলি। সেখান থেকে এক রান আসতেই ৭৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় লিটনের।

প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারালেও সেভাবে রান তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে লাঞ্চের পর তিন উইকেট হারালেও ২৭ ওভারে ১২৪ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ১০৮ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.