৭৭৯ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পেল পিয়ারসন এডেক্সেল ‘হাই অ্যাচিভারস অ্যাওয়ার্ড ২০২২’

ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘নাইনথ একাডেমিক অ্যাওয়ার্ড সেরেমনি আয়োজন করেছে পিয়ারসনের সর্ববৃহৎ কোয়ালিফিকেশন ব্র্যান্ড এডেক্সেল।

২০২১ এবং ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক জিসিএসই এবং এ লেভেল পরীক্ষায় যেসব বাংলাদেশী শিক্ষার্থী অসাধারণ ফলাফল অর্জন করেছে তাদের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পিয়ারসন এডেক্সেল। ২০২১ ও ২০২২ সালে পরীক্ষায় অসাধারণ নৈপুণ্য অর্জনের জন্য ৭৭৯ জনকে পুরষ্কার দেয়া হয়। এদের মধ্যে ১৩ জন বিভিন্ন বিষয়ে পুরো বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে। ৬৫৮ জন আন্তর্জাতিক জিসিএসই এবং ১০৮ জন আন্তর্জাতিক এ লেভেল পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য পুরষ্কৃত করা হয়।

এসব শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক জিসিএসইর বিষয়গুলোতে অন্তত ৭টি বিষয়ে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে এবং এ লেভেল পরীক্ষায় ৪টি বিষয়ে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। তাদের মধ্যে এমন কিছু শিক্ষার্থীও রয়েছে যারা আন্তর্জাতিক জিসিএসই-তে ১১টি বিষয়ে ‘এ’ গ্রেড এবং এ লেভেল পরীক্ষায় ৬টি বিষয়ে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার  ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, এমপি, এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, ব্রিটিশ কাউন্সিলের রিজিওনাল এক্সামস ডিরেক্টর  হ্যারিয়েট গার্ডনার, পিয়ারসন স্কুল কোয়ালিফিকেশনস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এমা হোয়েল, অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন  প্রেমিলা পলরাজ, এমপ্লয়াবিলিটি এন্ড কোয়ালিফিকেশনস ডিরেক্টর,  পিয়ারসন, জিম ও’নিল, কান্ট্রি এক্সামস ডিরেক্টর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, আবদুল্লাহ আল মামুন লিটন, রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, পিয়ারসন, বাংলাদেশ ও নেপাল, জুনায়েদ আহমেদ, ডিরেক্টর অপারেশনস এক্সামিনেশনস, ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার  ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন,  “ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের আত্মবিশ্বাস এবং দক্ষতার মাধ্যমে বাস্তব জীবনে কাজ করতে সক্ষম হবে। আমাদের সন্তানদের জন্য তাদের চমৎকার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে প্রস্তুত হওয়ার জন্য এখনই সেরা সময়, আগামীর নেতৃত্বের দেওয়ার  জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের অবশ্যই তাদের জ্ঞানের প্রয়োগ করতে হবে। আমরা সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ করে  দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আমরা কোভিড প্রোটোকলের সময়ও আমাদের কাজ করেছি, যাতে শিক্ষার্থীদের সময় এবং প্রচেষ্টা বৃথা না যায়”।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন উপস্থিত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার এবং একটি দেশের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, আমাদের অনেকগুলি প্রকল্প রয়েছে যা তরুণদের জন্য তৈরি হয়েছে। এই অর্জন একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের জন্য একটি দুর্দান্ত বিনিয়োগ “।

ব্রিটিশ কাউন্সিলের রিজিওনাল এক্সামস ডিরেক্টর হ্যারিয়েট গার্ডনার বলেন, “আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে সরাসরি কাজ করছি যাতে তাদের দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং নতুন সংযোগ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তাদের জীবনমান পরিবর্তন করে একটি উন্নত বিশ্ব গঠন করা যায়। আমরা তাদের সহযোগীতা করেছি ইংরেজি শেখার জন্য, নেটওয়ার্ক তৈরি এবং তাদের সৃজনশীল ধারণাগুলি খুজে বের করতে, যাতে করে তারা উচ্চ-মানের শিক্ষা পায় এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যোগ্যতা অর্জন করে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরীক্ষা পরিষেবাগুলি আপনাকে এই নিশ্চয়তা দেয় যে, এখান থেকে পাওয়া যোগ্যতা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিয়োগকর্তাদের দ্বারা স্বীকৃত। আপনার একাডেমিক বা পেশাগত ক্ষেত্র যাই হোক না কেন, এই যোগ্যতা  আপনার সব চাহিদা পূরণ করবে”

পিয়ারসন স্কুল কোয়ালিফিকেশনস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এমা হোয়েল তার বক্তব্যে বলেন, ” সবার জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যেও পরীক্ষা পদ্ধতির জন্য একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত, সকল শিক্ষক, স্কুল এবং আমাদের সহকর্মীদের ধন্যবাদ, কারণ কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যেও উদ্ভাবনী উপায়ে মাধ্যমে তারা পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন”

পিয়ারসন কোয়ালিফিকেশন অর্জন করতে আগ্রহী এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম প্রধান দেশ। এখানে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন এবং এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থীই আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ভীনদেশী স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান।

ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং পিয়ারসন এর কর্মকর্তারা আশা করেন যে এই ধরনের যৌথভাবে আয়োজিত বার্ষিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্কুলগুলো ভবিষ্যতে আরও বেশি সাফল্য অর্জনে উৎসাহিত হবে।

উল্লেখ্য যে, ব্রিটিশ কাউন্সিল যুক্তরাজ্যের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং শিক্ষার সুযোগের জন্য নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা। এটি বর্তমানে শিল্প ও সংস্কৃতি, ইংরেজি ভাষা, শিক্ষা এবং নাগরিক সমাজের ক্ষেত্রে ১০০ টিরও বেশি দেশের সাথে কাজ করে। গত বছর সংস্থাটি সরাসরি ৬৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে এবং অনলাইন সম্প্রচার এবং প্রকাশনার মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে ৭৩১ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌছার মাধ্যমে ১০০ টির বেশি দেশে একটি ইতিবাচক অবদান রেখে – সুযোগ তৈরি করে, সংযোগ তৈরি করে এবং নতুন চিন্তাধারা দিয়ে অসংখ্য মানুষের জীবনে পরিবর্তনের ছোয়া আনছে। ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থাটি  রয়্যাল চার্টার এবং ইউকে পাবলিক বডি দ্বারা পরিচালিত একটি ইউকে দাতব্য সংস্থা, যা  যুক্তরাজ্য সরকারের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ মূল তহবিল অনুদান পায়।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.