‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই বলেই পুঁজিবাজারের উন্নতি নেই’

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, দেশের পুঁজিবাজারের অনেক রকমের সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে, সেগুলোর সমাধানও হয়েছে। সব সমস্যার সমাধান করে বাজারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেয়ার পরেও দেশের পুঁজিবাজারের উন্নতি নেই। কারণ বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই। রিটেইল মার্কেট দিয়ে এ বাজার বেশিদূর নিয়ে যাওয়া যাবে না।

সালমান এফ রহমান বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকের লাইসেন্স তো কম দেয়া হয়নি। সব অনুকূল পরিবেশই আছে। তবে বাজারের এ হাল কেন? ব্যাংকের দক্ষ জনবল আছে তারাই সব কর্ম পরিচালনা করে। বোর্ড শুধু সিদ্ধান্ত দেয়। তাই নতুন নতুন ব্যাংকগুলোও ভালো করছে। কিন্তু বাজারে দক্ষ জনবলের অভাব।

বুধবার (১২ অক্টোবর) বেলা ৩ টা ৩০ মিনিটে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) আয়োজিত ‘বিনিয়োগকারীদের স্থিতিস্থাপকতা: চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্ঠা বলেন, ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে কেন তালিকাভুক্ত হতে চায় না দুইটি কারণে, প্রথমত লভ্যাংশ দিতে হয় বলে, দ্বিতীয়ত শেয়ারের দর ভালো পাওয়া যায় না বলে। আমি ভালো কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে বলেছে, তালিকাভুক্ত হলে শেয়ারের সঠিক মূল্য পাওয়া যায় না। আর সবচেয়ে বড় যে সমস্যা সেটা হচ্ছে, এই বাজার ডিভিডেন্ড ড্রিভেন, ক্যাপিট্যাল গেইন ড্রিভেন না। অর্থাৎ তালিকাভুক্ত হলে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে হবেই। কিন্তু ভালো কোম্পানিগুলো চায় তাদের মুনাফা তারা আবার বিনিয়োগ করবে আর ব্যবসা বাড়াবে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, পুরো পৃথিবীজুড়ে মহামারি করোনায় যা হয়েছে তা আমরা ভাবতেও পারি না। পুরোবিশ্ব একসাথে এই খারাপ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। খুব অল্প সময়ের মাঝে কোভিড ভ্যাক্সিন আবিস্কার করতে পারাই যার প্রধান কারণ। ২ বছর পর যখন সব স্বাভাবিক হলো তখন এই নতুন সমস্যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই পরিস্থিতি থেকে বের হবার কোনো দ্রুত সমাধান নেই। যা আমরা ফেস করছি তা খুবই চ্যালেঞ্জিং।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকলকে গ্যাস, বিদ্যুৎ সহ সকল জ্বালানি ব্যবহারে হিসেবি হতে বলেছেন। তিনি খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে খুব মনযোগী। আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমাদের দেশের মাটি বেশ উর্বর। তারপরেও ভবিষ্যতে সব পরিস্থিতির মোকাবেলায় খাদ্য উৎপাদন সচল রাখতে হবে।

এসময় বিএপিএলসির সভাপতি এম আনিস উদ দৌলার সভাপতিত্বে এবং বিএপিএলসির সহ-সভাপতি  সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং বিএপিএলসির সাবেক সভাপতি আজম জে চৌধুরী।

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাজারে বর্তমানে যে পদ্ধতি আছে সেটা পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ আমরা চাই সব কোম্পানি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে না আসুক। অনেক কোম্পানি আছে তারা এই সুযোগ নিয়ে মানুষের টাকা মেরে দেবে। আমরা সেই সুযোগ বন্ধ করতে চাই। তবে ভালো কোম্পানি আসতে চাইলে আমরা তাদের সুযোগ সুবিধা দিয়ে বাজারে নিয়ে আসব। আমরা নিশ্চিত করব তারা যেন শেয়ারের ভালো দাম পায়।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান, বিএপিএলসির সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াদ মাহমুদ এবং বিএপিএলসির ইসি সদস্য ও আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মমিনুল ইসলাম।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.