দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ৪৭ হাজার কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। আমদানির চেয়ে রপ্তানি আয় কম হওয়ায় এই বাণিজ্য ঘাটতি হচ্ছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। একই সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতিও ১.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এক হাজার ২৬৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৮১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। এতে ৪৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ৪৭ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি, বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখি ও আশানুরূপ রেমিট্যান্স প্রবাহ না থাকায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ছে বাংলাদেশ।

আলোচ্য সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। আগস্ট মাস শেষে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ১৫১ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ২১৯ কোটি ডলার। এ খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৪৫ কোটি ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের আগস্ট শেষে চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি ২০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ১৪১ কোটি ২০ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ৪২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগের বছর পাঠিয়েছিলেন ৩৬৮ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এফডিআই বেড়েছে ৩০ শতাংশ

দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ বাড়ছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে ৬০ কোটি ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়ে ৭৮ কোটি ডলারে উঠেছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সরাসরি মোট যে বিদেশি বিনিয়োগ আসে তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ নিয়ে যাওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট এফডিআই বলা হয়। আলোচিত সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগও আগের বছরের চেয়ে ৪৫ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে ৩৬ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছর একই সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ২৫ কোটি ডলার।

আলোচিত সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) ইতিবাচক অবস্থায় আছে। অর্থবছরের প্রথম দুই মা‌সে শেয়ারবাজারে বিদেশিরা (নিট) ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছেন। তার আগের অর্থবছরে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার ঋণাত্মক ছিল।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.