চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশসহ সকল মধ্যম আয়ের দেশকে সহযোগীতার স্বীকৃতি লাভ

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সবসময় অনুন্নত দেশগুলোকে ভর্তুকির মাধ্যমে সহযোগীতার কথা বলা হলেও মধ্যম-আয়ের দেশগুলোকে এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এ ধরনের সহযোগীতার কথা আগে আলোচনাই আসেনি। তবে এবারই প্রথম এ সম্মেলনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশসহ সকল মধ্যম আয়ের দেশকে সহযোগীতার করার নীতিগত স্বীকৃতি পেয়েছে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে। এতে করে ভবিষতে আরো বিশদ আলোচনার একটি ক্ষেত্র তৈরি হলো বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।

দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) শনিবার ডব্লিউটিও ১২তমম ন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের ফলাফল শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে । এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শরিফা খান, সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, অর্থ মন্ত্রনালয়।এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিএবি প্রেসিডেন্ট মো: শাহাদাৎ হোসেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কাউন্সিল মেম্বার মো: হুমায়ুন কবীর আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন। সূচনা বক্তব্য রাখেন আইসিএবি’র সিইও শুভাশীষ বসু।

শরিফা খান বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশে পরিনত হবে। এ সময় আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার আর থাকবে না। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য দেশ অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের সাথে সাথে বহি:বিশ্বে সফল বাণিজ্য নেগোশিয়েশন চালিয়ে যেতে হবে।

সরকার দেশে সহজ ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য কাজ করছে। তবে বেসরকারী খাত কেবল ভর্তুকির দিকে না তাকিয়ে নিজস্ব পণ্য উৎপাদন, পণ্য বহুমুখীকরণ ও পণ্য মানের দিকে মনোযোগী হতে হবে। যাতে করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের টেকসই অবস্থান থাকে। সেবখাতে মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে বিদেশের বাজারে এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে ভর্তুকি বা সহজ প্রবেশাধিকার খুব বেশি একটা কাজে আসবে না। মেধাসত্ব অধিকার দ্বারা বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প কিছুটা লাভবান হচ্ছে। এর ফলে কোম্পানীগুলো স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন সফটওয়্যার ও বই ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। তবে এই সুবিধা কতদিন থাকবে তা বলা মুশকিল। দেশেীয় ঔষধ শিল্পকে একটি সমন্বিত কর্ম-পরিকল্পনা করে আগামীতে টিকে থাকতে হবে।

সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের ১২তম বৈঠকের জন্য এলডিসি গ্রুপের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছিল তার সংক্ষিতসার তুলে ধরে বলেন, ভু-রাজনৈতি প্রেক্ষাপট চিন্তা করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও)-র ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়। বাংলাদেশ প্রথমবারে মতো সক্ষম হয়েছে যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সহ সকল মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে সহযোগীতার করার নীতিগত স্বীকিৃতি পেয়েছে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে ; যেটি আগে কোন সম্মেলনে এ ধরনের আ্লোচনা করাই হতো না ।

তিনি আরও বলেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার পরও বাংলাদেশসহ অন্যান্য এলডিসি দেশের জন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যসুবিধা আরও কয়েকবছর অব্যাহত রাখার অবস্থান তুলে ধরে। এছাড়াও আমরা মনে করি-উন্নয়নশীল দেশের মৎস্যখাতের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই খাতে ভর্তুকি সহ খাদ্য সংকটে কোন দেশ খাদ্যদ্রব্য রপ্ততানীতে বাধা দিতে পারবে না, তবে নিজ দেশে এ ঝুঁকি থাকলে এটি বলবৎ থাকবে না-আলোচনার ফলাফলচিত্রে স্থান পেয়েছে ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.