সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ১৮ আসামির মধ্যে চার জনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। তবে তাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আসামি পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
আসামিরা হলো- সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, মো. ইয়াছিন আলী, তোফাজ্জল হোসেন ও মাহফুজুর রহমান। তারা প্রত্যেকে চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত।
এর আগে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ওই দিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় তদন্ত শেষে হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা হয়েছে। এরপর মামলার আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একইসঙ্গে রাকিবের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেওয়া হয়।
এদিকে রাকিবের জামিন আবেদনের মাধ্যমে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছিল, ঘটনার সময় ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না। পরে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাকিবের মামলার বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাকিবুল।
রাকিবুলের আবেদনে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতকে মামলাটির বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সব আসামিকে সাজা দিয়ে রায় দেন। রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ অপরাপর আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। পরে মামলা থেকে খালাস চেয় আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করে এবং জামিন চেয়ে আবেদন জানায়।
অর্থসূচক/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.