বিমা খাতকে পিছিয়ে রাখলে চলবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘বিমা খাত পিছিয়ে থাকলে চলবে না। সব সেক্টরের মতো বিমা সেক্টরে সরকার ইতিবাচক পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। নানা কারণে বিমা খাতে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। দেশের অর্থনীতির জন্য এই খাতটি বিশেষে গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এই খাতে নজর রাখছে।

রোববার (৩ জুলাই) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর এবং সাফল্যের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উৎসব শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব এক বলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জীবন বিমার একজন কর্মীকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। ইন্স্যুরেন্স ক্ষেত্রে নতুন আইডিয়া নিয়ে আসবেন। আপনাদের আইডিয়া বাস্তবায়নে আমরা পাশে থাকব। গ্রামকে শহর করতে প্রধানমন্ত্রী কাজ করছেন। এ ক্ষেত্রে বিমা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দেশের সবর্ত্র পরিবর্তন হয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে ইন্স্যুরেন্স সেক্টরেও ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। তবে আমরা একা কিছু করতে পারব না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। তবে বিমা সেক্টর জনগণের আস্থার জায়গাটা এখনও তৈরি করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে আধুনিক বিমা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা জনগণের আস্থা তৈরি করব।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, ‘বিমা মানুষের ঝুঁকি কমিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে, আর্থিক নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে। বিমার প্রতি আস্থাটা জরুরি। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখলে একটা রির্টান পাওয়া যায়। কিন্তু জীবন বিমা মানুষের জীবনের ঝুঁকি নেয়।’ তাই বিমা মেয়াদ শেষে সেটেলমেন্টটা সময় মতো করা খুব জরুরি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিমার বড় সমস্যা আস্থার সংকট। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ইন্স্যুরেন্সগুলো ভালো করছে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো ভালো করছে না। তারা এমএলএম ব্যবসাও করছেন। তাই আমি আশা করব, আইডিআরএ সবাইকে নিয়ে এখানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে।’

বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, ‘বিমা সেক্টরে ইনোভেটিভ প্রোডাক্টের খুব অভাব। সবাই একই প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছি। এই সেক্টরে আমাদের ইনোভেটিভ প্রোডাক্ট নিয়ে আসতে হবে।’

আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘করপোরেট গভর্নেন্সের অভাবের কারণে মানুষের মাঝে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট কাটাতে আইডিআরএ কাজ করছে।’ বিমা শিল্প প্রসারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে সবাইকে কাজ করে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলম বলেন, ‘সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান এই তিনটি হচ্ছে আমাদের স্লোগান। এই স্লোগান নিয়ে ন্যাশনাল লাইফ এগিয়ে চলেছে। গুটি কয়েক কোম্পানির কারণে এখানে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।’ এ ক্ষেত্রে ওই কোম্পানিগুলো ম্যানেজমেন্টে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিমা সেক্টরের প্রধান সমস্যা আস্থা সংকট। এই আস্থা সংকট কাটাতে আমাদের যথাসময়ে প্রিমিয়াম দিতে হবে। বিমা সেক্টরে আস্থা অর্জনে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তারা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল লাইফের সিইও মো. কাজিম উদ্দিন।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.