পিকে হালদারের নতুন বান্ধবীর সন্ধান

দেশের আর্থিক খাতের বড় জালিয়াত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) নতুন এক বান্ধবীর সন্ধান পাওয়া গেছে। আর নতুন এই বান্ধবী পিকের সাথে ধরাও খেয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের (ইডি) হাতে। তার নাম আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদার।

গত শুক্রবার গ্রেপ্তার হওয়া পিকে হালদারকে চার দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়। ইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিকে হালদার ও তার সঙ্গীদেরকে আরও ১০ দিনের জন্য ইডির রিমান্ডে দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে আদালত আমানা ওরফে শর্মিকেও ১০ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এই সময় জেলে তাকে ইডির গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

এখন পর্যন্ত ইডির গোয়েন্দারা ভারতে পিকে হালদারের প্রায় দেড়শ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পেয়েছেন। নিবিড় অনুসন্ধানে আরও সম্পদের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পিকে হালদার তার কিছু সহযোগীকে নিয়ে মাছের ঘেরের ব্যবসা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা চালাতেন। এসব ব্যবসা ও অর্থ পাচার বা লেনদেনে আমানা ওরফে শর্মির কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা অর্থাৎ তার মাধ্যমে কোনো আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখবেন গোয়েন্দারা।

তবে আমানা সুলতানা ওরফে শর্মির পরিচয় সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি। ইডির গোয়েন্দারা এ সংক্রান্ত বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি।

এর আগে পিকে হালদার পালিয়ে যাওয়ার পর  তার দুই বান্ধবী নাহিদা রুনাই ও অবন্তিকা বড়ালের নাম ব্যাপক আলোচনায় আসে। এরা শুধু তার বান্ধবী-ই নন, তার নানা অপকর্মের সহযোগীও বটে।  পিকে হালদারের সঙ্গ পাওয়ার ব্যাপারে এদের মধ্যে নাকি রীতিমত প্রতিযোগিতা চলতো। আর তাদের পরষ্পরের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা ছিল

‘সতীনের মতো’।নাহিদা রুনাই, পিকে হালদার ও অন্তিকা বড়াল (বাম থেকে)

দুদকের অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুজনের বিরুদ্ধেই মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই মামলায় রিমান্ডে গেছেন অবন্তিকা বড়াল ও নাহিদা রুনাই। তারা দুজনই এখন গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বন্দী।

নাহিদা রুনাই ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট। দুদক কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুসারে, পি কের টাকা পাচারের অন্যতম সহযোগী এই নাহিদা রুনাই। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হচ্ছে সেই হিসাব রাখতেন রুনাই। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন মহলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করতে রুনাইয়ের দক্ষতা অপরিসীম। তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করতে সিদ্ধহস্ত।

পি কের দখলে থাকা ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজের ১০০ কোটি টাকা নিজের মতো করে খরচ করার সুযোগ পান রুনাই। এ ছাড়া পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানিতে (বিআইএফসি) রুনাইয়ের প্রভাব ছিলো উল্লেখ করার মতো।

অবন্তিকা বড়াল হচ্ছেন পিকে হালদারের জন্মস্থান পিরোজপুর জেলার মেয়ে। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকের মেয়ে অবন্তিকা বাবার মৃত্যুর পর ঢাকা এসে পিকে হালদারের বান্ধবীতে পরিণত হন। হাল ক্যাপিটাল নামে যে মার্চেন্ট ব্যাংকের মালিক পিকে হালদার, সেটি সুখদা নামে একটি কোম্পানি কিনেছিল। আর এই সুখদার অন্যতম মালিক হিসেবে দেখানো হয় অবন্তিকা বড়ালকে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.