ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির পর থেকেই পশ্চিমা মহল থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এসেছে পৃথিবীর বৃহত্তম দেশ রাশিয়ার উপর। এবার খাতা-কলমে নিষেধাজ্ঞার ফল ভোগ করতে শুরু করেছে দেশটি। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ২০ বছরের মধ্যে রাশিয়ার মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে।
গেলো শুক্রবার (১৩ মে) রাশিয়ার জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা রোসস্ট্যাটের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এপ্রিলে রাশিয়ার বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০০২ সালের পর এটি রাশিয়ার সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি।
খবর রয়টার্সের।
এদিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, চলতি বছর রাশিয়ার মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। আগামী বছরও উচ্চ মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে হবে দেশটিকে। তবে দেশটির পরিসংখ্যান বিভাগ বলছে, ২০২৪ সালে অবস্থা স্বাভাবিক হবে। তখন রাশিয়ার মূল্যস্ফীতি ৪ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
তবে বাৎসরিক হিসাবে এপ্রিলে রাশিয়ার মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বী হলেও মাসিক হিসাবমতে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি অনেকাংশে কমে এসেছে।
অন্যদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি বাজে হয়ে উঠতে শুরু করলে মার্চ মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি গিয়ে ঠেকে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশে। মাসিক মূল্যস্ফীতির হিসাবে ১৯৯৯ সালের পর এটিই ছিল সর্বোচ্চ। তবে এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কমে ১ দশমিক ৫৬ শতাংশে এসে দাঁড়ায়।
মূলত পশ্চিমাদের তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার অর্থনীতি শুরুতে বড় রকমের ধাক্কা খেলেও এখন অনেকটা সামলে ওঠেছে। বর্তমানে দেশটির মুদ্রা রুবলের দাম ইউরোর বিপরীতে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও চীন ও ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য জমে ওঠায় অনেকটাই সংকট কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে দেশটি।
রোসস্ট্যাটের তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, গত মার্চে রাশিয়ার মাসিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। খাদ্যপণ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ।
কিন্তু এপ্রিলে ঘুরে যায় মূল্যস্ফীতির চিত্র। এপ্রিলে মাসিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে এর হার ছিল ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও খাদ্যপণ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ।
অর্থসূচক/এমআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.