নারায়ণগঞ্জ সিটিতে ভোটের লড়াই শুরু

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের সব ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া টাঙ্গাইল-৭ শূন্য আসনের (মির্জাপুর) উপ-নির্বাচন ও পাঁচটি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এসব নির্বাচনী এলাকায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।

নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার। দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে ব্যালটে লড়ছেন আইভী। আর তৈমূর ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন হাতি প্রতীক নিয়ে। ভোট শেষ হলেই বোঝা যাবে হাতির জোর বেশি, নাকি পালে হাওয়া নিয়ে জোর বেশি নৌকার।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখা জানিয়েছে, কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়োজিত আছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া কেন্দ্রের বাইরেও অবস্থান নিয়েছেন বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। ইতোমধ্যে প্রচার কাজ বন্ধ রাখার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে ১৮ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার তো দূরের কথা সব ধরনের জনসভা, পথসভা, মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে।

ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে মেয়র পদে সাতজন, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৩৪ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী হলেন- খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেওয়াল ঘড়ি), স্বতন্ত্র থেকে বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাও. মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া) ও আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা)।

এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের প্রায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৯২টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৩৩৩টি ভোটকক্ষে। এর মধ্যে ৩০টি ভোটকেন্দ্রকে ঝূঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে মাঠ প্রশাসন।

ভোটকেন্দ্র পাহারায় নিয়োজিত রয়েছেন পুলিশ, অঙ্গিভূত আসনার/ভিডিপির ১৫ জনের ফোর্স। তবে ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন ১৬ জনের ফোর্স।

এদিকে ভোটের এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ২৭টি মোবাইল টিম, নয়টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও চারটি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। আবার ১৪ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ২৭টি টিমও ভোটের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে। নির্বাচনের দু’দিন পরও তারা ভোটের এলাকায় নিয়োজিত থাকবে।

অন্যদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে ও নির্বাচনী অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ সম্পন্ন করতে নিয়োজিত করা হয়েছে ৩৬ জন নির্বাহী হাকিম ও ১৪ জন বিচারিক হাকিম।

২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর নাসিকে এবার হচ্ছে তৃতীয় নির্বাচন। প্রথমবার ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে এবং এবার ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে।
নাসিক নির্বাচনের পাশাপাশি একটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন ও পাঁচ পৌরসভার সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণও করছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের খান আহমেদ শুভ (নৌকা), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির গোলাম নওজব চৌধুরী (হাতুড়ি), জাতীয় পার্টির মো. জহিরুল ইসলাম জহির (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের রূপা রায় চৌধুরী (ডাব) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম নুরু (মোটরগাড়ি)।

নির্বাচনে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ১২১টি ভোটকেন্দ্রের ৭৫৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে কেন্দ্র পাহারায় নিয়োজিত রয়েছেন ১৬ জনের ফোর্স। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত করা হয়েছে পুলিশ ও আনসারের ১৮ জনের ফোর্স।

এদিকে চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, নোয়াখালী জেলার নোয়াখালী, যশোর জেলার ঝিকরগাছা, নাটোর জেলার নাটোর ও বাগাতিপাড়া পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৬ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে ১৬ জন স্বতন্ত্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যরা বিভিন্ন দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.