স্বাস্থ্যবিধি মানাতে উদাসীনতা সব গণপরিবহনে

নতুন ধরন ওমিক্রনসহ দেশের সামগ্রিক করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তবে তৃতীয় দিনেও গণপরিবহনে দেখা যায়নি বিধিনিষেধের লেশমাত্র । সর্বত্রই দেখা গেছে উদাসীনতা। বিধিনিষেধ মানাতে সড়কে নেই কোনো ধরনের তদারকিও।

আজ (শনিবার) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাসে অফিসগামী যাত্রীদের ঠাসাঠাসি করে ওঠানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নীতি মানছেন না যাত্রীদের অনেকে। মাস্ক থাকলেও তা কারও হাতে, কারও পকেটে। অধিকাংশ চালক ও সহকারীর মাস্ক ঠাঁই পেয়েছে থুতনিতে।

দেশে গত কিছুদিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু ‍হু করে বাড়ছে। শুক্রবার শনাক্তের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে নতুন ধরন ওমিক্রন উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১১ জানুয়ারি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখাসহ ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন, সব ধরনের যানের চালক ও সহকারীদের করোনার টিকা নেওয়ার সনদ সঙ্গে রাখার কথা বলা হয়েছে।

রাজধানী থেকে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মিরপুর, মোহাম্মদপুর থেকে উত্তরা, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে বিভিন্ন কোম্পানির বাস। এর মধ্যে আছে বসুমতি, রইছ, ওয়েলকাম পরিবহন, মিরপুর মেট্রো সার্ভিস, বৈশাখী পরিবহন, প্রজাপতি, ৭নং বাস, গাবতলী এক্সপ্রেস ৮নং বাস, লাব্বাইক, মৌমিতা, ভূঁইয়া পরিবহন, ট্রান্স সিলভা, ঠিকানা, বাহন পরিবহন, সৌদিয়া মিনি বাস, আলিফ, অগ্রদূত, এস এম লাভলী, দিশারী, নিউ ভিশন, সজন, হিমাচল, তালুকদার ও সাভার পরিবহন।

অধিকাংশ বাসে দেখা যায়, চিরচেনা রূপে দরজায় দাঁড়িয়ে হেলপার যাত্রী ডাকছেন, টেনে তুলছেন। যাত্রীদের কারও মাস্ক থুতনিতে, কারও হাতে, কারও পকেটে। আবার কারও কারও মাস্কই নেই। সব সিটে যাত্রী নেওয়ার পাশাপাশি দাঁড়িয়েও যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। যাত্রী ওঠানো এবং নামানোর ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।

মোহাম্মদপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচলকারী ভূঁইয়া পরিবহনের একটি বাসের চালকের সহকারী সুজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইতেই থুতনি থেকে মাস্ক টেনে মুখে তোলেন তিনি।

অনেক পরিবহনের হেলপার ক্যামেরা দেখেই মাস্ক পরেছেন। এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা জবাব না দিয়ে দরজা লাগিয়ে দেন।

সদরঘাটগামী ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসের হেলপারের মুখে মাস্ক নেই। বাস একটু সামনে যেতেই সার্জেন্ট কে দেখে পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরলেন হেল্পার।

এভাবে চলতে থাকলে দেশের মহামারি পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যাবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাই ওমিক্রনসহ করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পরা ঠেকাতে প্রশাসনের তদারকি বৃদ্ধির পরামর্শ দেন তারা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.