সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে চায় বাংলাদেশ-ভারত

চলমান সুসম্পর্ক বজায় রেখে একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে চায় বাংলাদেশ ও ভারত। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌজন্য সাক্ষাতে এমন প্রত্যাশার কথা উঠে আসে।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা সফররত ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের ৫০ বছরের সুসম্পর্ক। আমরা ওনাকে (ভারতের রাষ্ট্রপতি) বলেছি, এ সুসম্পর্ক সোনালী অধ্যায়, এটা অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ। কারণ আমরা অনেক বড় বড় সমস্যা নিজেরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি। আগামী ৫০ বছরে আমরা বিভিন্ন দিকে একে অপরকে সাহায্য করে উন্নতির শিখরে পৌঁছাবো। আমরা কানেক্টিভিটির কথা তুলে ধরেছি। আগামীতে নতুন-নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করার কথা বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার কথা তুলে ধরেছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কোভিডের সময়ে ভারত সহযোগিতা করেছে সেটা তুলে ধরা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক। এ সম্পর্কের ফলে অত্র এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে। ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাপারে অংশীদারিত্ব রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে কথা হয়েছে।’

এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপদের সময়ে ভারত বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে আশ্রয় দেওয়ায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, দুর্গাপূজার পর যে সমস্যা হয়েছে সেই ইস্যুতে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখানে সংখ্যালঘু হিসেবে কাউকে ট্রিট করা হয় না। সবাইকে সমান অধিকার দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার সকালে ঢাকায় আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে স্বাগত জানান। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

সফরের শুরুতে সকালে রাম নাথ কোবিন্দ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

সফরসূচি অনুযায়ী, ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে রয়েছেন। এ সময় ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি টি-৫৫ ট্যাংক এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে উপহার হিসেবে দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর রামনাথ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ভারতের রাষ্ট্রপতি গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। একই দিন বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের সাউথ প্লাজায় বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং রক্তস্নাত বিজয়ের আবেগ ও আনন্দ উদযাপনের জন্য আয়োজিত মহাবিজয়ের মহানায়ক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন।

সফরের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর রামনাথ ঢাকার রমনা কালী মন্দিরের সদ্য সংস্কারকৃত অংশের উদ্বোধন করবেন এবং মন্দিরটি পরিদর্শন করবেন। ওই দিন দুপুরে তিনি দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.