ফেব্রুয়ারি থেকে উৎপাদন শুরুর প্রত্যাশা সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের 

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের উৎপাদন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করার আশা করছে আলিফ গ্রুপ। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপন করা বলে জানিয়েছেন আলিফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আজিমুল ইসলামী।

আজ (সোমবার) ‘বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা’ শীর্ষক একটি ব্যানার নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

আলিফ গ্রুপের এমডি বলেন, ব্যাংকের দায়দেনা পরিশোধের পর যন্ত্রপাতি বিএমআরই বা উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে। এজন্য দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। এছাড়া গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপন করতে পারলে আশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই উৎপাদনে যেতে পারবো।

আজিমুল ইসলাম বলেন, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল গত ৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। সুদসহ ব্যাংকের দেনা রয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। আর সুদ ছাড়া ২২ কোটি ৫০ হাজার টাকা দেনা রয়েছে। কোম্পানিটির কিছু অব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি রয়েছে এবং কিছু যন্ত্রপাতির কোন খোঁজ নেই, আবার কিছু যন্ত্রপাতি এখনও ব্যবহার উপযোগী করা হয়নি। এছাড়াও কোম্পানির কারখানার গ্যাস লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বন্ড লাইসেন্স স্থগিত, সম্পদ বণ্টনে অসামঞ্জস্যতা এবং বর্তমান উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে মাত্র ৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

তিনি বলেন, কোম্পানিটি চালু করতে প্রাথমিকভাবে ৩০ থেকে ৬০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এজন্য শিগগিরই একটি শেয়ার মানি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। যেখানে শেয়ার মানি ডিপেজিট হিসাবে বেঁধে দেয়া অর্থ জমা রাখা হবে। এই অর্থ ব্যাংক ঋণ নিয়মিতকরণে ব্যবহার করা হবে। ফ্যাক্টরি ও যন্ত্রপাতির বিএমআরইতে ব্যয় হবে। পুনরায় গ্যাস লাইন চালু করতে ও বন্ড লাইসেন্স স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে ব্যয় হবে এবং কোম্পানির কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে ব্যয় হবে।

তিনি আরও বলেন, শেয়ার মানি ডিপোজিট হিসাবে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের জমা করা অর্থ সাধারণ শেয়ারে রূপাপন্তর করা হবে। যা ডিএসইতে লেনদেন হওয়া সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের শেয়ারের এক বছরের মূল্যমানের সমান। এটি বিএসইসির অনুমোদনক্রমে বাস্তবায়িত হবে।

সিঅ্যাডএ টেক্সটাইলের বর্তমান পরিচালকদের হাতে মাত্র ৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উল্লেখ করে আজিমুল ইসলাম বলেন, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণে এই মূলধন বৃদ্ধি, সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এরপরও এ শর্ত পূরণ না হলে বাজার থেকে বাকি শেয়ার কিনতে হবে। শেয়ার কখনোই বিক্রয়যোগ্য নয়। এই প্রক্রিয়ায় কোম্পানি পুনরায় চালুর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করা যাবে।

সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে কোম্পানির কারখানা পুনরায় চালুর পর এর ধারণ ক্ষমতা আবারো সম্প্রসারণ করতে হবে। বর্তমানে কোম্পানিরর ২১৬ শতাংশ ভূমি রয়েছে। যা কোম্পানি সম্প্রসারণের জন্য যথেষ্ট নয়। এজন্য ঢাকায় আমাদের অন্যান্য কারখানার কাছে সিঅ্যান্ডিএ টেক্সটাইলের কারখানা স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। ব্যবসা বাড়াতে নতুন যন্ত্রপাতি আমদানির পরিকল্পনাও রয়েছে।

আলিফ গ্রুপ ১৯৬৭ সালে ওয়েল ট্রেডিং কোম্পানির মধ্য দিয়ে দেশে ব্যবসা শুরু করে। সেখান থেকে তৈরি পোশাক, বস্ত্র, সুতা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আবাসন খাত, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, শিক্ষা- প্রযুক্তিসহ নানা খাতে আমাদের ব্যবসার পরিধি বেড়েছে। ৫৩ বছরে ধরে বাংলাদেশে সফলতার সাথে ব্যবসা করে আসছে আলিফ গ্রুপ। বর্তমানে বছরে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করছি আমরা। সেখান থেকে বছরে আয় হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আলিফ গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার নিয়াজ মোর্শেদ, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) মোহাম্মদ হানিফ।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.