হামজা টেক্সটাইলসে ২ কোটি ২৭ লাখ ডলার বিনিয়োগ করলো আইএফসি

বাংলাদেশের দুলাল ব্রাদার্স গ্রুপের (ডিবিএল) ডায়িং ও ফিনিশিং কোম্পানি হামজা টেক্সটাইলস লিমিটেডে ২ কোটি ২৭ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন- আইএফসি।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২ কোটি ২৭ লাখ মার্কিন ডলারে এই বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৯৫ কোটি ২২ লাখ টাকা।

আইএফসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই অর্থ দিয়ে হামজা টেক্সটাইলস আধুনিক ও সাশ্রয়ী প্রযুক্তি সম্বলিত নতুন একটি কারখানা তৈরি করবে, যেখানে প্রত্যক্ষভাবে নয়শ’র বেশি মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। আইএফসির এই বিনিয়োগে হামজা টেক্সটাইলসের দৈনিক ফিনিশিং সক্ষমতা ৮০ টন বাড়াবে এবং নতুন কারখানার কারণে মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে দৈনিক ১০৩ টন। কারখানাটি হবে লিডারশিপ ইন অ্যানার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সনদপ্রাপ্ত।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে কোভিড মহামারীর ধাক্কা সামলাতে এটাই আইএফসির প্রথম বিনিয়োগ। এই তহবিলের একটি অংশ আসবে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাশোসিয়েশনের প্রাইভেট সেক্টর উইন্ডো (আইডিএ-পিএসডব্লিউ) থেকে, যা গঠন করা করা হয়েছে নিম্ন আয়ের এবং দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোতে বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়ার জন্য।

ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ জব্বার বলেন, “নতুন কারখানা হলে ক্রেতাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে নতুন কাপড় নিয়ে কাজ করতে পারবে হামজা। এর উৎপাদন সক্ষমতা বাড়বে এবং খরচ কমাতে কার্যকর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হবে, যাতে জলবায়ুর ক্ষতিও কমবে।”

আইএফসির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হেক্টর গোমেজ আং জানান, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এ দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা পূরণে এ শিল্প সহায়তা করছে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বজায় রাখতে এ শিল্প উচ্চ মূল্য সংযোজিত পণ্যের দিকে যাচ্ছে এবং আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করছে, যা কোভিড-১৯–এর প্রভাব বিবেচনায় আরও জরুরি হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এ বিনিয়োগ অন্যদের সমৃদ্ধ বাজারের দিকে যেতে এবং প্রতিযোগিতা মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করতে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে কাজ করবে।’

সংবাদ বিজ্ঞেপ্তিতে বলা হয়, আইএফসির এই বিনিয়োগের ফলে ২০২৮ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে ৮০ লাখ ডলার যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া কর্মীদের আয় এবং সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আরও ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার যোগ হবে।

আইএফসি এ পর্যন্ত বাংলাদেশে পাঁচটি তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছে এবং ৯ কোটি ডলারের বেশি সরবরাহ করেছে, যার অধিকাংশই ঋণ আকারে দেওয়া হয়েছে। ডিবিএল গ্রুপের সঙ্গে এই উদ্যোগ আইএফসির এ খাতে সবশেষ বিনিয়োগ। ২০১৩ সালে আইএফসি এ গ্রুপের আরেকটি ডাইং ও ফিনিশিং কোম্পানি কালার সিটি লিমিটেডকে ১০ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন করে। ডিবিএল গ্রুপে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বিনিয়োগ করল আইএফসি।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.