চাপে পড়ে ফিরলেন ওয়েড

১৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট তুলেন নিলেন শেখ মেহেদি হাসান। ওপেনিংয়ে নামা অ্যালেক্স ক্যারিকে শূন্য রানে বোল্ড করেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। এরপর বোলিংয়ে এসে উইকেটের দেখা পান নাসুম আহমেদ। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারলেও চতুর্থ বলে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন জস ফিলিপে। নিজের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসানও। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড আউট হয়েছেন ময়সেস হেনরিকস।

৩ উইকেট হারিয়ে বসা অস্ট্রেলিয়া পাওয়ার প্লেতে তোলে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান। এরপর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সফরকারীদের আরও চাপে রাখেন শরিফুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং নাসুম আহমেদ। তবে দশম ওভারে দলীয় ৪৯ রানে অজিদের চাপমুক্ত করতে গিয়ে নাসুমকে উইকেট দিয়ে বসেন ম্যাথু ওয়েড। ২৩ বলে ১৩ রান করে ফেরেন তিনি। এরপর ক্রিজে নেমে দলকে ৫০’র উপর নিয়ে যান অ্যাস্টন অ্যাগার। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন মিচেল মার্শ।

এর আগে প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে মিচেল স্টার্কের মিডল অ্যান্ড লেগ স্টাম্পে ফেলা বল ফ্লিক করে ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশের রানের খাতা খোলেন নাঈম শেখ। ওই ওভারে আর কোন রান না এলেও দ্বিতীয় ওভারে জশ হ্যাজেলউডের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেননি সৌম্য সরকার।

পাওয়ার প্লে চলাকালীন তৃতীয় ওভারেই ম্যাথু ওয়েড বল তুলে দেন অ্যাডাম জাম্পাকে। সেই ওভারে এক বাউন্ডারি সহ ৬ রান দেন তিনি। কিন্তু চতুর্থ ওভারের প্রথম দুই বলে বাউন্সে সৌম্যকে নাকাল করার চেষ্টা করেন হ্যাজেলউড।

যার ফল এই পেসার পান তৃতীয় বলে। স্টাম্পের লাইন ছেঁড়ে হ্যাজেলউডকে খেলতে গেলে বুক বরাবর করা বলে ইনসাইড এজে হল্ড হন সৌম্য। ৯ বলে ২ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে নেমে প্রথম বলেই ২ রান নেন সাকিব।

পঞ্চম ওভারে ওয়েড আবারও বোলিংয়ে নিয়ে আসেন স্টার্ককে। কিন্তু ওভারের দ্বিতীয় বলে আবারও ডিপ কভার পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান নাইম। এরপর পঞ্চম বলে নেন সিঙ্গেল।

পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে চতুর্থ বোলার হিসেবে অ্যান্ড্রু টাইকে নিয়ে আসেন ওয়েড। ওভারের তৃতীয় বলে এই পেসারের বাউন্সারে পুল করে বাউন্ডারি হাঁকান নাঈম। পরের বলে নেন ২ রান। ওভারের শেষ বলে আসে সিঙ্গেল।

সপ্তম ওভারে আবারও জ্যাম্পাকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন ওয়েড। ওভারের প্রথম ৫ বলে মাত্র ৪ রান দেয়া এই লেগ স্পিনারকে শেষ বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন নাঈম। জ্যাম্পার ফুল লেন্থে ফেলা বলে বোল্ড হয়ে ২৯ বলে ৩০ রান করে ফেরেন তিনি।

অষ্টম ওভারে অ্যাস্টন অ্যাগারের বিপক্ষে ৪ রান নেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে জাম্পাকে সোজা উড়িয়ে চার মারেন সাকিব। পরের বল এজ হয়ে স্লিপের সাইড দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারিতে। সেই ওভারে আসে ১০ রান।

দশম ওভারের তৃতীয় বলে স্লিপে অ্যাস্টন টার্নারের হাতে জীবন পান মাহমুদউল্লাহ। সে সময় তার রান ছিল ৫। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে তোলে ৫৮ রান। ১২তম ওভারের প্রথম বলেই ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ছক্কার মারার বলের বলে আবারও তুলে মারতে গিয়ে ময়সেস হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশের এই টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।

হ্যাজেউডের বলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ করেছেন ২০ বলে ২০ রান। এরপর ১৫তম ওভারে টাইয়ের স্লোয়ারে থার্ড ম্যানে মিচেল মার্শের হাতে ধরা পড়েন নুরুল হাসান। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরেন এই উইকেটরক্ষক। ১৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮৯।

১৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৭ রান দেন অ্যাগার। ৪ ওভারে ৬’র নিচে ইকোনমি রেটে ২২ রান দিয়ে শেষ করেন তিনি। তখনও ১৬ ওভারে দলীয় ১০০ পার করতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৬তম ওভারের চতুর্থ বলে হ্যাজেলউডকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে স্বাগতিকদের ১০০ পূরণ করেন আফিফ। সেই ওভারের শেষ বলে হ্যাজেলউডকে সামনে এগিয়ে স্লগ করতে গিয়ে ইনসাইড এজে বোল্ড হন সাকিব। ৩৩ বলে ৩৬ রান করে বিদায় নেন তিনি। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন অজি এই পেসার।

১৮তম ওভারের শেষ বলে দারুণ এক ইয়র্কারে শামিম পাটুয়ারিকে ৪ রানে বোল্ড করেন স্টার্ক। এরপর ক্রিজে নেমে আফিফকে সঙ্গ দেন শেখ মেহেদি। ১৯ ওভার শেষে ৬ উইকেটে বাংলাদেশের স্কোর তখন ১২০। শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসা স্টার্ককে রিভার্স স্কুপে ৪ মারেন আফিফ। এরপরের বলে এই পেসারের ফুল টসে বোল্ড হলেও আম্পায়ার নো বল দেন। সঙ্গে বাংলাদেশ পায় ৩রান। তবে ফ্রি হিটে আকাশে বল তুলে মাত্র এক রান নিতে পারেন আফিফ। এরপর পঞ্চম বলে আসে এক রান। ইনিংসের শেষ বলে ইয়র্কারে বোল্ড হন আফিফ। এর মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ৫০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন অজি এই পেসার।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.