লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবি, ৫৭ অভিবাসীর মৃত্যুর আশঙ্কা

লিবিয়া উপকূলে শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএম’র মুখপাত্র সাফা এমসেহলি জানিয়েছেন, অভিবাসীদের বহনকারী ওই নৌকা গত রোববার (২৫ জুলাই) লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর খুমস থেকে ছেড়ে যায়। নৌকাটিতে সেসময় কমপক্ষে ৭৫ জন অভিবাসী ছিলেন।

এমসেহলি আরও জানিয়েছেন, নৌকাডুবির পর জীবিত ফিরে আসা নাইজেরিয়া, ঘানা ও জাম্বিয়ার অভিবাসীরা জানান- খুমস শহর থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে একপর্যায়ে নৌকাটি সমুদ্রে ডুবে যায়।

টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার এই মুখপাত্র বলেন, নৌকাডুবির পর কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করেন সাগরে থাকা জেলে ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী- ডুবে যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন নারী এবং ২ জন শিশু রয়েছেন।

ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে প্রাণহানি এটা সর্বশেষ ঘটনা হলেও এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছে। প্রায়ই এ পথে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও লোকজনকে এ থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না।

মাত্র এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে ভূমধ্যসাগরে অপর এক দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জন ডুবে মারা গেছেন। সে সময় আরও ৫শ জনকে লিবিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়। গত কয়েক মাসে লিবিয়া দিয়ে বিভিন্ন দেশে প্রবেশের ঘটনা বেড়ে গেছে।

আইওএম বলেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কমপক্ষে এক হাজার ১৪৬ জন মারা গেছেন। ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টাকারী মানুষের সংখ্যা ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে ‘লিবিয়া থেকে ইতালি’ যাওয়ার পথটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এই পথে ডুবে মারা গেছেন ৭৪১ জন। এরপর আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিম আফ্রিকা থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপের পথ ছিল দ্বিতীয় প্রাণঘাতী; এই পথে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৫০ জন। এছাড়া পশ্চিম ভূমধ্যসাগরের স্পেনমুখী পথে মারা গেছেন কমপক্ষে ১৪৯ জন এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরের গ্রিসের পথে প্রাণ গেছে ৬ জনের।

আইওএম বলেছে, অনেক জাহাজ ভেঙে ডুবে যাওয়ায় এবং শনাক্ত করতে না পারায় ইউরোপগামী ভূমধ্যসাগরের পথে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।

সূত্র: আল-জাজিরা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.