আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্টের যাত্রা শুরু

রাজধানীর ৩০০ ফিট সংলগ্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) চেষ্টা করেছে হারানো ঐতিহ্যকে ধারণ করতে, মুঘলদের প্রকৃত খাদ্যাভ্যাস সকলের কাছে পরিচিতি করাতে। সেই লক্ষ্যেই সোমবার (২১ জুন) হয়ে গেলো আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্টের রাজসিক উদ্বোধন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, বসুন্ধরা গ্রুপের সেক্টর এ মার্কেটিং এবং আইসিসিবির সিওও এম এম জসীম উদ্দিন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, মুঘল রাজ পরিবারের আদব কেতা, পোশাক আশাক এবং খাদ্যাভ্যাস যেন এক হিরণ্ময় ইতিহাস। একেকটি রহস্যে ঘেরা গল্প। সেই জৌলুসময় জীবনাচরণের ইতিহাস আজ বিলুপ্তপ্রায়। আমরা মুঘলদের খাদ্যাভাস নিয়ে জানতে চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি তাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করতে। আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্টে ঢাকার মানুষ পরখ করতে পারবে সেসব অসাধারণ খাবারের আয়োজন এবং উপলব্ধি করতে পারবে তাদের রাজসিক জীবন।

ইমদাদুল হক মিলন বলেন, মুঘলদের রান্নায় স্বাদ, রাজকীয়তার এই মেলবন্ধন যুগের পর যুগ ধরে মানুষের রসনা কে তৃপ্তি দিয়ে আসছে। আজও আমরা এই লোভনীয় খাবারের রসাস্বাদন করি। কিন্তু সত্যিকার সেই স্বাদ বা সেই আয়োজনের ঘাটতি বর্তমানে লক্ষ্যণীয়। ধন্যবাদ বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষকে এবং আইসিসিবিকে এই সাহসিক ও রাজসিক পদক্ষেপের জন্য। আইসিসিবি হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট কেবল উদরপূর্তির মাধ্যম হওয়ার জন্য আসেনি, এসেছে একটি শিল্পকে, একটা ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে।

মুঘলদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই উপমহাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদিতে ঘটেছে পরিবর্তন। মুঘলদের হাত ধরে আসে বিভিন্ন মজাদার খাবারগুলো। তবে এই মুঘল খাদ্যশৈলী কিন্তু একদিনে আসেনি। ক্রমশ সময়ের সাথে সাথে মুঘলদের প্রচেষ্টার ফলে এসেছে মুঘল রন্ধনশৈলী এবং সেই মুঘল রন্ধনশৈলী থেকে মুঘলাই খাবার। লিজি কলিংহ্যাম এর লেখা Curry: A Tale of Cooks and Conquerors এর বইটি পড়ে জানা যায়, বাবরপুত্র হুমায়ুন শেরশাহের সাথে যুদ্ধে কোনঠাসা হয়ে পারস্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারপর যুদ্ধে জয়লাভের পর পারস্য থেকে বগলদাবা করে আনেন কয়েকজন পারস্যিক বাবুর্চি। তারপর সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর তত্ত্বাবধানে মুঘলদের রান্নাঘরে ঢোকে আরো বহুজাতিক বাবুর্চি।

মশলার গুনেই হোক কিংবা মুঘলদের রসুইঘরের বাবুর্চিদের হাতের জাদুতেই হোক, সেই সময় থেকেই মুঘল রান্নার ছিল জগত্‍ জোড়া সুখ্যাতি। নামে বেনামে সেই সুখ্যাতিকে উপজীব্য করে বাংলাদেশে, বিশেষ করে ঢাকায় প্রচলিত হরেক রকমের মুঘলাই খাবারে ঠাসা। কিন্তু এর অধিকাংশই মানহীন এবং মুঘল মর্যাদার বিপরীত, ক্ষেত্রবিশেষে বিলুপ্তপ্রায়।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.