টিকা নেবেন না বলে একসঙ্গে নদীতে ঝাঁপ দিলেন পুরো গ্রামবাসী

করোনা মহামারির তাণ্ডবে বিপর্যস্ত ভারত। দেশটিতে এখনো দৈনিক দুই লক্ষাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে চার হাজারের বেশি। এ অবস্থায়ও টিকা নিয়ে ভারতের অনেকের মধ্যেই ভীতি ও কুসংস্কার রয়েছে।

টিকা নেওয়া মানেই ‘বিষ’প্রয়োগ। এমনই ধারণা বদ্ধমূল ভারতের উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকির সিসাউদা গ্রামের বাসিন্দাদের। আর সেই ধারণা থেকে তারা যা করলেন, তা যেমন আকস্মিক, তেমনই উদ্বেগজনকও। গ্রামবাসীদের করোনা টিকা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিজ্ঞতাও হল ভিন্ন। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিকা নেবেন না বলে গ্রামের সবাই মিলে ঝাঁপ দিলেন নদীতে! কারণ, তারা মনে করেন, ‘বিষ’ ইঞ্জেকশন নেওয়ার চেয়ে নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়াও ভাল।

করোনা সংক্রমণ রুখতে চলতি বছরের গোড়া থেকে ভারতে শুরু হয়েছে গণ টিকাকরণ। মাঝে টিকা সংকটের জেরে গতি কমেছে। ইতমধ্যে ২০ কোটি মানুষকে দেওয়া হয়েছে করোনা টিকা। যেখানে টিকারই আকাল, সেখানে তা নষ্ট হওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক। অথচ উত্তরপ্রদেশের সিসাউদা গ্রামে তেমনটাই হল। স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীদের টিকা দিতে। ছিলেন মহকুমাশাসকও। সবাইকে বুঝিয়ে বিনামূল্যে সরকারের তরফে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরিকল্পনাই সার। বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ আলাদা। দেখা গেল, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিকা নিতে কেউ তো রাজি হলেনই না, উলটে তাকে ‘বিষ ইঞ্জেকশন’ বলে ভয়ে দূরে সরে গিয়ে সটান নদীতে ঝাঁপ দিলেন!

তবে তার আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অবশ্য গ্রামবাসীদের করোনা টিকার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা হয়। এমনকী পলায়নরত গ্রামবাসীদের ধরতে রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। ২০০ জন গ্রামবাসী একসঙ্গে ঝাঁপ দিলেন সরযূ নদীতে। সবশেষ অনেক বুঝিয়ে মাত্র ১৪ জনকে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.