খালেদা জিয়াকে শাস্তির নামে অপমান করা হয়েছে: গয়েশ্বর

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শাস্তির নামে অপমান করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কোনো অন্যায় করেননি। তিনি কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি। তার সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন। তার পরও কেন তাকে কারাগারে দেওয়া হলো? কারণ, একটি দেশের তাঁবেদারি করতে হলে খালেদা জিয়া মুক্ত থাকতে পারেন না।

আজ সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় । খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্বের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র তৈরি করতে গেলে তিনি (খালেদা জিয়া) বাইরে থাকতে পারেন না। বাংলাদেশে দুর্নীতির অভয়ারণ্য তৈরি করতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে থাকতে হয়।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনের বিষয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা কখনো আল-জাজিরা টিভি চ্যানেল দেখতে চাইনি। এখন আল-জাজিরা দেখতে হচ্ছে কেন? আল-জাজিরা টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের দুর্নীতির চিত্রের এক হাজার ভাগের এক ভাগ। সরকার স্বভাবসুলভ ভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে প্রতিবাদ জানায়। তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আপনাদের প্রমাণ করতে হবে আল জাজিরার প্রতিবেদন সত্য নয়।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের জনগণ দেশের দুর্নীতির কাহিনী জানে। এই দুর্নীতিগ্রস্ত দেশকে যদি বাঁচাতে চান, যদি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে অলিখিত যুদ্ধে শামিল হতে হবে। এই যুদ্ধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে বন্দিত্ব থেকে মুক্তি করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি হলে দেশে গণতন্ত্রের নেতৃত্বের মুক্তি হবে। তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিদেশের মাটিতে থাকতে হয় না। তিনি (তারেক রহমান) বাংলাদেশের মাটিতে এসে জনগণকে নেতৃত্ব দিতে পারেন।

আমি বার বার বলছি, আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করে রাজপথ ছাড়ব না। আমাদের কথায় নয়, কাজেই প্রমাণ করতে হবে। রাজপথ আমাদের দখলে নিতে হবে। রণাঙ্গনের সব পথ-ঘাট জনগণের দখলে নিতে হবে, যোগ করেন গয়েশ্বর।

সরকারের সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকারকে ঘর থেকে বের হওয়ার পথ তৈরি করতে হবে। ঘরে বসে বসে তারা প্রতিদিন আবোলতাবোল কথা বলছে। অবজ্ঞা-তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে মানুষকে কথা বলা তাদের রোগে পরিণত হয়েছে। কারণ তাদের ভোটের প্রয়োজন হয় না, তাদের জনগণের সমর্থন লাগে না।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন একটি গণতান্ত্রিক দেশ দেখার জন্য। সেই গণতান্ত্রিক দেশে জিয়াউর রহমানের সৈনিক, খালেদা জিয়ার অনুসারী এবং তারেক রহমানের সহকর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব জনগণের পাশে থেকে অধিকার ফিরিয়ে আনা।

নির্বাচন কমিশন নিয়েও কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কথা বলে লাভ হবে না। এটা একটা প্রতারক কমিশন। এরা প্রতারণা করছে জনগণের সঙ্গে। ঠাট্টা-মশকরা করছে জনগণের সঙ্গে। শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য অন্যায়ভাবে যা খুশি তা করছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, করোনাকে উপেক্ষা করে আপনারা যারা রাস্তায় বেরিয়েছেন এই জীবনটাকে অর্থবহ করার জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করার জন্য, আমরা সেই যুদ্ধে শামিল হই।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব প্রমুখ।

অর্থসূচক/কেএসআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.