ড. ইউনূসের দণ্ড স্থগিতের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৬ মাসের কারাদণ্ডের রায় স্থগিতের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা চলমান থাকবে।

আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। কলকারখানা অধিদফতরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

এর আগে, শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড পাওয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড স্থগিতের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর ১৪ মার্চ শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। আদালতে ওইদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তানভীর শিহাব খান।

তারও আগে তৃতীয় শ্রম আদালতের ১ জানুয়ারি দেওয়া রায় ও আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ২৮ জানুয়ারি দেওয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ড. ইউনূসসহ চারজন ও রাষ্ট্রের পক্ষে ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

একই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাজার রায় থেকে অব্যাহতি পাওয়া ড. ইউনূসকে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এ মামলার বাকি তিন আসামিকেও বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে একই আদেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়।

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা ড. ইউনূসসহ চারজনকে কারাদণ্ড দেন। শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাদের। অপরদিকে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত।

এরপর আসামিপক্ষ আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে এক মাসের জন্য জামিন দেন। সেই সময়সীমার মধ্যেই আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। ড. ইউনূস ছাড়া অন্য তিন বিবাদী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল গত ২৮ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ৩ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেন। আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে নথি তলব করেন। এছাড়া ৩ মার্চ পর্যন্ত দণ্ড স্থগিত করেন।

পরে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন। এছাড়া দণ্ডিতদের বিদেশ যেতে হলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করে যেতে হবে বলে আদেশ দেন।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.