বাংলাদেশের লড়াকু পুঁজি

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে এই ম্যাচেও টসে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে আগের মতো আগে ব্যাটিং করেনি তারা। উল্টো বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও শূন্য রানে আউট হন লিটন দাস।

দিলশান মাদুশঙ্কার লেগ স্টাম্প বরাবর করা বল ফ্লিক করেছিলেন লিটন। বল চলে গিয়েছিল সোজা স্কয়ার লেগে। সেখানে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন দুনিথ ওয়েলালাগে। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন আরেক ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ও ওপেনার সৌম্য সরকার।

এই দুজনে যোগ করেন ৭৫ রান। অবশ্য এই জুটি ভেঙেছে শান্ত ফেরাতে। বাংলাদেশ অধিনায়ক দিলশান মাদুশঙ্কার অফ স্টাম্প ঘেঁষা দারুণ এক লেংথ বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে মেন্ডিসকে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন। শান্ত আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৪০ রানে।

এরপর তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে ইনিংস টানছিলেন সৌম্য। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে সুইপ করে চার মেরে ৫২ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সৌম্য। মনে হচ্ছিল আরও অনেকদূর যাবেন এই ব্যাটার। তবে তাকে ফিরিয়ে ৫৫ রানের জুটি ভেঙেছেন হাসারাঙ্গাই। লঙ্কান এই লেগ স্পিনারের বলে রিভার্স সুইপ করেছিলেন সৌম্য।

ভালো টাইমিং হলেও বল চলে গিয়েছিল মিড উইকেটে। সেখানে দৌড়ে এসে দারুণ ক্যাচ মুঠোবন্দি করেছেন মাদুশঙ্কা। ফলে ৬৬ বলে ৬৮ রান করে শেষ হয়েছে সৌম্যর ইনিংস। আউট হওয়ার আগে ১১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছক্কা। এর আগে দ্রুততম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ২ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সৌম্য।

সৌম্য আউট হওয়ার দুই বল পর ফিরে গেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। আগের ম্যাচে ৩৭ রানের ইনিংস খেলা রিয়াদ আউট হয়েছেন শূন্যরানে। হাসারাঙ্গার গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে স্টাম্পিং হয়ে আউট হয়েছেন তিনি। এরপর হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম মিলে যোগ করেন ৪৩ রান।

মুশফিককেও আউট করেছেন হাসারাঙ্গা। এই লেগ স্পিনারের ফুল লেংথের বলে সুইপ করতে গিয়েছিলেন মুশফিক। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। বল আঘাত করেছিল সোজা প্যাডে। লঙ্কান ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল। তবে শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিলে দেখা যায় বল লেগ স্টাম্পে পিচ করে আঘাত করত লেগ মিডল স্টাম্পে।

ফলে থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা দেন মুশফিককে। ২৮ বলে ২৫ রান করে ফিরে যেতে হয় তাকে। মেহেদী হাসান মিরাজকেও বেশিক্ষণ থিতু হতে দেননি হাসারাঙ্গা। এই স্পিনারের বলে এগিয়ে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তবে শেষ মুহূর্তে নিজের ভুল বুঝে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তবে সেই বলে সোজা আঘাত করে স্টাম্পে। ১২ রান করেই ফিরে যেতে হয় মিরাজকে।

লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া তাওহীদ হৃদয় ৭৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। শেষদিকে হৃদয়কে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। এই দুজনের জুটি থেকে এসেছে ৪৭ রান। মাদুশঙ্কার ওপর চড়াও হতে গিয়ে ৩৩ বলে ১৮ রান করে আউট হয়েছেন সাকিব। মাদুশঙ্কার লেংথ বলে বড় শট খেলতে গিয়ে মিড অফে হাসারাঙ্গার হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হতে হয়েছে তাকে।

হৃদয়কে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তাসকিন আহমেদও। এর মধ্যে প্রমোদ মাদুশানকে পরপর দুই বলে ছক্কা ও চার মারেন তাসকিন। লাহিরু কুমারাকে ইনিংসে শেষ দুই বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯৬ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন হৃদয়। তাসকিন ইনিংস শেষ করেছেন ১০ বলে ১৮ রান নিয়ে। ফলে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.