এফসিসি প্রোগ্রামের প্রথম ব্যাচের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের যৌথ উদ্যোগে ফাইনান্সিয়াল ক্রাইম অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স (এফসিসি) প্রোগ্রামের প্রথম ব্যাচের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন হয়েছে। এই “এফসিসি সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম” ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের একটি যৌথ উদ্যোগ। আর্থিক অপরাধের জটিলতা মোকাবেলায় করতে এই কোর্সটি অ্যাকাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করেছে৷ এই বছরের শুরুতে চালু হওয়া এই উদ্যোগটি বাংলাদেশে প্রথম।

এই এফসিসি সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম ইন্ডাস্ট্রি ও সমাজকে রক্ষা করতে কমপ্লায়েন্সের মান বাড়ানো এবং আর্থিক অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। কোর্সের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল মানি লন্ডারিং, সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং অন্যান্য অবৈধ আর্থিক কর্মকা- চিহিৃতকরণ এবং প্রতিরোধকরণ। নৈতিকতা, প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ এবং কমপ্লায়েন্স পদ্ধতির গুরুত্বও পাঠ্যবস্তুর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই কোর্সের পুরোটা সময় শিক্ষার্থীদের পরামর্শ প্রদান করেছেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, ব্র্যাক বিজনেস স্কুল এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক এবং দক্ষ ব্যাংকরা।

সম্প্রতি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে এই কোর্সের সমাপন উপলক্ষে সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুব রহমান, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাসের এজাজ বিজয় এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মুজিবুল হক।

এই অনুষ্ঠানে বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তির এই যুগে এফসিসিকে একটি অত্যন্ত যুগোপযোগী কোর্স বলে উল্লেখ করেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাসের এজাজ বিজয়। তিনি বলেন, “প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেনের কারণে বছরে কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সরকার, ব্যাংক, জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই কোর্সে অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেন এবং কর্মকান্ড ঠেকানো সম্ভব হবে। এর ফলে সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সার্বিকভাবে জনগণের উপকার হবে।”

এফসিসি সার্টিফিকেট কোর্সটি ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাকাডেমিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর মাহবুব রহমান। তিনি বলেন , “নৈতিকতা হলো একটি শক্তিশালী আর্থিক অবস্থার ভিত্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি নৈতিকতা এবং সহানুভূতিবোধ জাগিয়ে তোলা।” আর্থিক খাতে অনিয়ম দূর করতে তিনি সরকারসহ সবার সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই সার্টিফিকেট প্রোগ্রামটি অ্যাকাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আর্থিক অপরাধ ও কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত জ্ঞান শিক্ষার্থীদের পেশাজীবনে বাকিদের তুলনায় এগিয়ে রাখবে বলে মন্তব্য করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর মুজিবুল হক। তিনি বলেন, “এই কোর্সটি অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞান এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রেখেছে যা আর্থিক অপরাধগুলিকে আরো ভালোভাবে চিহ্নিত করতে এবং এর প্রতিরোধে তাদের সাহায্য করবে।”

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম ও কৃতিত্বের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে এই কোর্সে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তারা এই কোর্সটিকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোর্স হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এই কোর্সের অভিজ্ঞতা তাদের পেশাজীবনে কাজে লাগছে বলে মন্তব্য করেন।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.