স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী’র (পারভেজ) নেতৃত্বে রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে একটি সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সভার শুরুতে মন্ত্রীকে বিসিআই পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ হতে ফুলের শুভেচ্ছা এবং বিসিআই’র ‘আমার পণ্য আমার দেশ’ লোগো সম্বলিত একটি ফ্রেম উপহার দেওয়া হয়।

সাক্ষাৎ কালে বিসিআই সভাপতি বলেন, পুনরায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দ্বায়িত্ব পাওয়ায় বিসিআই’র পক্ষ হতে আমরা আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনার নেতৃত্বে দেশের আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যাবস্থা অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক ভালো এমনকি বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায়ও ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে দেশের জঙ্গি দমন ও চরমপন্থি দমনে আপনার অবদান অনিশ্বিকার্য। হরতাল-অবরোধের সময়ও এবার ব্যবসা বাণিজ্য স্বাভাবিক থাকায় আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

বিসিআই সমগ্র বাংলাদেশ ভিত্তিক একক এবং একমাত্র জাতীয় শিল্প চেম্বার বিসিআই স্থানীয় সকল শিল্পের উন্নয়নের পথে সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কাজ করে চলেছে। দেশের শিল্প খাত বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছে। দেশে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান তার ৬০-৭০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে, উচ্চ মূদ্রাস্ফীতির কারনে সব প্রতিষ্ঠানের সেলস ড্রপ করেছে, গ্যাসের প্রেসার কম, ঋনের উচ্চ সূদ হার আবার ব্যাংক সমূহ প্রপার সাপোর্ট দিতে পারছে না। সবকিছু মিলিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দেশীয় শিল্প।

আমরা দেশের এই সকল সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বসেছিলাম বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সম্পর্কে জানতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন প্রধান লক্ষ্য মূদ্রাস্ফীতি ৬% নিয়ে আসা। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকের ঋনের সূদ হার একটা নিদৃষ্ট পর্যায়ে রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু পলিসির কারনে ব্যাংক সমূহ বন্ডে বিনিয়োগের দিকে উৎসাহিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিবে। নতুন বিনিয়োগ আসবে না সাথে সাথে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে। আমাদের এখন বর্তমান শিল্প সমূহকে বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরী।

বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও খাদ্যের মূদ্রাস্ফীতি সব থেকে বেশি। এর একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে চাঁদা আদায়। আমরা মনে করি পণ্য পরিবহনের চাঁদা বন্ধ করা গেলে পণ্য মূল্য অনেকটাই কমে আসবে। এক্ষেত্রে আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। মূদ্রাস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচন নীতি গ্রহন করতে হবে না। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারনে ডলারের কারেন্ট একাইন্ট পজেটিভ হয়েছে যা আশাব্যাঞ্জক এবং আর্থিক হিসাবও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পজেটিভ হয়ে যাবে।

বর্তমানে কিশর গ্যাং নামি কিছু উচ্ছৃঙ্খল গোষ্টি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করছে। ঢাকায় বেশিরভাগ অপরাধ এদের দ্বারা সংগঠিত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ঢাকা শহরের এবং সমগ্র দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থপনায় আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আসলে সময় ও ব্যয় কমে আসবে এবং জ্বালানিরও সাশ্রয় হবে।

বিসিআই’র পক্ষ হতে গাজিপুর সহ শিল্প অঞ্চল সমূহে এটিএম বুথের আসে পাশে ছিনতাই বৃদ্ধি পাচ্ছে, এদিকে মন্ত্রী মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

মন্ত্রী মহোদয় বিসিআই’র পরিচালকদের বক্তব্য ধৈর্য্য সহকারে শোনেন এবং বলেন, দেশের শিল্প সমূহের অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। আমরা চাই দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাক। কারণ দেশের শিল্প বাঁচলে দেশের অর্থনীতি বাঁচবে। আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে দেশের পণ্য বাজার নিয়ন্ত্রনে কাজ করছি। পণ্য পরিবনের সময় চাঁদাবাজি বন্ধে আমরা কাজ করছি এটা আর থাকবে না। সব ধরনের অপরাধ বন্ধে আমরা বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে চলেছে। দেশের মানুয় যাতে নিরাপদে এবং শান্তিতে থাকতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

সভায় বিসিআই’র উর্দ্ধতন সহ-সভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুস, পবিচালকবর্গ, শহীদুল ইসলাম নীরু, ড. দেলোয়ার হোসেন রাজা, আবুল কালাম ভুঁইয়া, জিয়া হায়দার মিঠু, মিজানুর রহমান, রুসলান নাসির, নাজমুল আনোয়ার, সোহানা রউফ চৌধুরী, মো: সেলিম জাহান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) এ কে এম টিপু সুলতান উপস্থিত ছিলেন।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.