‘ঐক্যের’ আহ্বান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর

বৃহস্পতিবারের পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটাভুটি শেষ হওয়ার ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়৷ এত দেরি হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে৷

নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল৷দেশের বেশ কিছু জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ তাছাড়া বন্ধ ছিল ইন্টারনেট সেবা৷ কারাবাসে থাকায় ইমরান খানের দল পিটিআই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি৷ তাই ইমরানের সমর্থকদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়েছিল৷

দেশটির জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৪টি আসনের ফল ঘোষনা করা হয়৷ নির্বাচন পূর্ববর্তী সহিংসতায় একজন প্রার্থী নিহত হলে সেই আসনের ভোট স্থগিত করা হয়৷ তাছাড়া নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ উঠায় একটি আসনের ফল ঘোষণা স্থগিত করা হয়৷

এদিকে চূড়ান্ত ফলের আগে রাজনীতিবিদদের “ঐক্য”র আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ অসীম মুনির এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচন জয়-পরাজয়ের শূন্য বা সংখ্যার কোনো প্রতিযোগিতা নয়। এটা জনগণের মত নির্ধারণের একটি মহড়া।

এতে আরও বলা হয়েছে, নৈরাজ্য ও মেরুকরণের রাজনীতি দূর করতে দেশের স্থিতিশীল হওয়া প্রয়োজন। একটি নিরাময় স্পর্শ প্রয়োজন।

ইমরান খানের অভিযোগ, সামরিক বাহিনীকে তার বিরুদ্ধে কাজ করছে। যদিও সামরিক নেতারা সেসব দাবি অস্বীকার করেছেন। সাবেক ক্রিকেট তারকাকে ২০২২ সালে একটি অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়৷ এরপর থেকে তিনি ১৫০টার বেশি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন৷ ইমরান দাবি করেছেন, এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷

দুর্নীতির দায়ে ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস করার দায়ে আরো ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়অ এছাড়াও আরেকটি মামলায় দুর্নীতির কারণে আরো ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ সম্প্রতি ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবি উভয়কেই সাজা দেওয়া হয়৷ আদালত জানিয়েছে, তাদের বিবাহ পাকিস্তানের আইনবিরোধী৷ সে কারণে দুজনকে সাত বছর কারাদণ্ডে দেয়া হয়েছে৷

এদিকে আজ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন৷ কারাবন্দি সাবেক প্রথানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইসনাসফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্ররা ১০১টি আসনে জয়ী হয়েছে৷ অন্যদিকে আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রীনওয়াজ শরিফের দল ৭৫টি আসনে জয়ী হয়েছে৷ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে সমর্থনকারী পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪টি আসন নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে৷ অনান্য এগারোটি দল জাতীয় পরিষদে মোট ৩৪টি আসন পেয়েছে৷

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.