দুর্বল বিমা কোম্পানিগুলো মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত: বিএফআইইউ

মানিলন্ডারিংয়ের কৌশল ও মাধ্যম প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। আর্থিক সেবা খাতের মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্বল খাতকে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিশ্বে যে পরিমাণ মানিলন্ডারিং হয় তার প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে বিএফআইইউ’র উদ্যোগে লাইফ ইনস্যুরেন্স ও নন-লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলো নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিএফআইইউ প্রধান এসব কথা বলেন।

মাসুদ বিশ্বাস বলেন, বিশ্বে যে পরিমাণ মানিলন্ডারিং হয় তার প্রায় ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করা হয়। মানিলন্ডারারগণ প্রতিনিয়ত তাদের কৌশল ও মাধ্যম পরিবর্তন করে থাকে। এক্ষেত্রে আর্থিক সেবা খাতের মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্বল খাতকে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে। এ বিবেচনায় বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদেরকে মানিলন্ডারিং ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।

বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিএফআইইউ’র কাছে দাখিল করা সন্দেহজনক লেনদেনের সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল মর্মে উল্লেখ করে বিএফআইইউ’র পরিদর্শনে পাওয়া সন্দেহজনক লেনদেনের বিভিন্ন রেড ফ্ল্যাগেরর বিষয় তিনি উল্লেখ করেন। বীমা খাতের সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে খাতটির টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়াও তিনি, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানি পরিদর্শনে পাওয়া বিভিন্ন অনিয়ম তুলেন ধরেন। ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর রি-ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম বাবদ বিদেশি নামসর্বস্থ ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো, বীমা পলিসির মেয়াদপূর্তীর পরেও পলিসির বিপরীতে গ্রাহকদের দাবি নিষ্পত্তি না করা, প্রিমিয়াম বাবদ গৃহীত অর্থ সুষ্ঠুভাবে বিনিয়োগ না করে অন্যত্র স্থানান্তর, প্রিমিয়ামের অর্থ পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন

ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিভিন্নভাবে তছরূপ, বিভিন্ন ইনস্যুরেন্স কোম্পানিসমূহের কর্মকর্তাদের নিজ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন পরিচালনা, কর্মকর্তাদের এএমএল বা সিএফটি বিষয়ক আইন, বিধি, গাইডলাইন্স ও সার্কুলার এবং এ সংক্রান্ত ঝুঁকি বিষয়ে সম্যক ধারণা না থাকা ইত্যাদি বিষয় এ কর্মশালায় তিনি তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এস এম মাসুদুল হক বলেন, বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পলিসির মেয়াদপূর্তী সত্ত্বেও গ্রাহকদের দাবি অনিষ্পত্তিকৃত থাকে। বীমা খাতে অর্থ পাচারের সিংহভাগ পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে ঘটে।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের (ওউজঅ) পরিচালক এস এম মাসুদুল হক ও সহকারী পরিচালক আবু মাহমুদ। এতে রিসোর্স পার্সন হিসেবে ছিলেন অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহসিন হোছাইনী, যুগ্মপরিচালক মো. রোকন-উজ-জামান ও মো. মোশাররফ হোসেন।

এছাড়া প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন লাইফ ও নন-লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.