ডিসেম্বরে ১.৩১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

চলতি ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আমরা আগামী শুক্রবারের মধ্যে আইএমএফ থেকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার পাবো। এডিবি থেকে ৪০০ মিলিয়ন, সাউথ কোরিয়া থেকে ৯০ মিলিয়ন পাবে বাংলাদেশ। আরও অন্যন্য উৎস্য থেকে ১৩০ মিলিয়ন পাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

মেজবাউল হক বলেন, বর্তমানে আমাদের রিজার্ভ বিপিএম ৬ অনুযায়ী ১৯ বিলিয়নের মতো। এসব ঋণ সুবিধা পাওয়ার পর আমাদের রিজার্ভ বাড়বে। এ ছাড়া নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বড় পরিমাণে ডলার খরচ করতে হবে। কারণ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আকু বিলের ১ বিলিয়নের মতো রিজার্ভ থেকে খরচ হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে গতকাল রাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অনুমোদন হয়েছে। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় আইএমএফের পর্ষদ।

জানা যায়, বাংলাদেশকে দেওয়া আইএমএফ’র প্যাকেজে দুই ধরনের ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা বা বর্ধিত তহবিল (ইসিএফ অ্যান্ড ইএফএফ) থেকে পাওয়া যাবে ৩৩০ কোটি ডলার। রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় পাওয়া যাবে ১৪০ কোটি ডলার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ ঋণ কর্মসূচি চলাকালীন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের শর্ত পরিপালন ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।

আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, গত জুনে বাংলাদেশের প্রকৃত (নিট) রিজার্ভ থাকার কথা ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। কিন্তু তা রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে রিজার্ভ রাখার লক্ষ্য ছিল ২ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার। সেটিও হয়নি। ডিসেম্বরের লক্ষ্য ২ হাজার ৬৮০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ তাও পারবে না বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। এরপর বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকৃত রিজার্ভ নতুন করে ২ হাজার ৯৩ কোটি ডলারে বেঁধে দেয় আইএমএফ। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটির মানদন্ড বিপিএম ৬ অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ ১ হাজার ৯৬০ কোটি ডলারে রয়েছে। ঋণের শর্ত হিসেবে আইএমএফ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত রিজার্ভ রাখার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল ২ হাজার ৬৮১ কোটি ডলার। সে হিসাবে আগামী জুন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বর্তমানে প্রতিদিন রিজার্ভ থেকে সাত-আট কোটি ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। রাসায়নিক সার ও জ্বালানি কেনার জন্য এ পরিমাণ ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় চলতি অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়। দেশে প্রায় দুই বছর ধরে চলছে ডলার সংকট। এই সংকট কাটাতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তাতে বেশ একটা সুফল বয়ে আনতে পারেনি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এখনো রিজার্ভ থেকে ধারবাহিকভাবে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে এই সংকটের মধ্যে বিদেশি ঋণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.