ওচমানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠিত

‘হৃদয়ের টানে প্রিয় বিদ্যাঙ্গনে’ এ প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ওচমানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্ণ্যাঢ্য আয়োজনে সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মিলনমেলায় মুখরিত হয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গন।

সম্প্রতি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে বর্তমান ও প্রাক্তনদের বিভিন্ন ব্যাচের বন্ধুদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে উপজেলার ওচমানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।

সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে প্রাক্তনরা মেতে উঠেছিলেন আনন্দে, যেন খুঁজে পেয়েছিলেন নিজেদের শৈশব। পুরনো বন্ধুদের আবার একসঙ্গে পেয়ে যেন কর্মজীবনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছিল তাদের। পুরনো সতীর্থদের নিয়ে নতুন করে স্মৃতি জমাতে ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে ছিল অনেক কসরত।

একইসঙ্গে সতীর্থরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলির মাধ্যমে বন্ধুত্বের নতুন বন্ধন তৈরি করেন। সব ভেদাভেদ ভুলে নবীন প্রবীণ সবাই বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র থেকে এসে স্কুল প্রাঙ্গণে মিলিত হন। সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে বাড়তি আনন্দ যোগ দিয়েছে স্মারক গ্রন্থ স্পন্দন।

সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে সকাল সাড়ে ৮টায় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন, ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন, প্রাক্তনদের অংশগ্রহনে র‌্যালী, ফটোসেশন, উপহার ব্যাগ প্রদান, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের স্মৃতিচারণ, দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজে ছিলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান।

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক লায়ন মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিরাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির পক্ষে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগ নেতা আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব রহমান রুহেল।

প্রধান সমন্বয়কারী উপ-পরিষদের সদস্য রাহাত মোর্শেদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ ইসমাঈল খাঁন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. লুৎফুল আহসান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আশফাক হাসান, প্রতিষ্টাতা সদস্য ইন্জিনিয়ার জহুরুল হক, ওচমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন ছাত্র মফিজুল হক, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শাহ আলম।

আয়োজকরা জানান, সুবর্ণজয়ন্তীতে স্কুলের শিক্ষক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। ৫০ বছরের এ স্কুলের সফলতা অনেক। স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা অনেকেই দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত। সুবর্ণজয়ন্তীর একদিনের এ উৎসবে একে অপরকে পেয়ে গল্প, আড্ডা, সেলফি তোলা, স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণ, বর্তমান ব্যস্ততার মধ্যে সংসার জীবনের বাইরে এসে সব মিলিয়ে একটা প্রাণবন্ত উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। সবার গায়ে ছিল একই রঙের টি-শার্ট। ছিলো ক্রীড়া প্রতিযোগীতা এবং অনুষ্ঠানের শেষে ছিলো জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

প্রাক্তন ছাত্র রাহাত মোর্শেদ বলেন, সুর্বণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের মধ্যে নতুন করে মেলবন্ধন রচিত হয়। সুখ-দুঃখের স্মৃতি রোমন্থন করার সুযোগ ঘটে। স্কুলের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়।

এসময় ডিজিটাল প্লাটফরমে মাধ্যমে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে স্মৃতিচারণ করেন রেজাউল করিম চৌধুরী, মো. ফিরোজ কবির, আলাউদ্দিন মেম্বার, মো. মোশারফ হোসেন, ফরিদুল আলম স্বপন, শাহাদাত হোসেন, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম সুমন, মাজহারুল ইসলাম রনি, নাসরিন আক্তার রুমা, মেজবাউল আলম ছাত্তার ও মেহেদুল ইসলাম রাফিসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, উদযাপন কমিটির বিভিন্ন উপ-পরিষদের আহবায়ক-সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.