প্রথম অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন

ডেনমার্কের ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের সবুজ বিনিয়োগ প্রস্তাব বাংলাদেশের প্রথম ৫০০ মেগাওয়াটের ইউটিলিটি স্কেলের বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও প্রথম ধাপের উন্নয়নের জন্য প্রস্তাবিত এলাকা তিন বছরের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশে সরকার।

এর আগে ২০২৩ এর জুলাইয়ে ডেনমার্কের কোপেহেগেন ইনফ্রাস্টাকচার পার্টনারস (সিআইপি) ও কোপেনহেগেন অফশোর পার্টনারস (সিওপি) এবং বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ সহযোগে উক্ত বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রস্তাবনা দাখিল করা হয়।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কক্সবাজার জেলায় সমুদ্রতীর দূরবর্তী স্থানে (অফশোর) স্থাপিত হবে। প্রকল্পটি চালু হলে, ৫০০ মেগাওয়াটের (ইনস্টলড) উৎপাদিত বায়ুবিদ্যুৎ অনশোর সাবস্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে অতঃপর সরাসরি বাসা-বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে।

এই অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাংলাদেশের উপকূলবর্তী সম্পদ ও ‘নীল অর্থনীতি’ সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহারের জন্য এক অনন্য সুযোগ। বিনিয়োগ প্রস্তাবটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেওয়া হয়েছে যখন বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ক্লিন এনার্জি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে জাতীয়ভাবে আমদানিকৃত জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতার সঙ্গে এই মুহূর্তে বৈশ্বিক মূদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি মিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। এ জন্য বাংলাদেশে দ্রুত ইউটিলিটি স্কেলের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎপ্রকল্প গড়ে তোলা প্রয়োজন।

একই সঙ্গে জলবায়ুসহিষ্ণু প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে যা দেশের চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে অতিদারিদ্র্য দূর করতে সহায়ক হবে। ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) গবেষণালব্ধ অনুমান বলছে, দেশের এই সবুজ রূপান্তরের জন্য বার্ষিক ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। সামিট, সিআইপি ও সিওপি’র শত কোটি ডলারের প্রকল্প প্রস্তাবটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে, যা জলবায়ু সমৃদ্ধিশীল ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে টেকসই ভূমিকা রাখবে।

বাস্তবায়িত হলে এটিই হবে বাংলাদেশে, সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়াতেও, প্রথম অফশোর উইন্ড এনার্জি প্রকল্প যা প্রযুক্তি সক্ষমতা তৈরীর মাধ্যমে নতুন শিল্পখাতের উন্মোচন করবে। প্রাথমিক নিরীক্ষা অনুযায়ী, প্রকল্পটির নির্মাণকাজের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজারো চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া প্রকল্পটির প্রথম ৩০ বছরের পরিচালনাকালে উচ্চতর দক্ষ পদে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।

 

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.