আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই, আমরা অনেক কিছু হারিয়েছি। অনেক মা সন্তান হারিয়েছেন। আর পেছনে ফিরবো না। এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে ঘরে ফিরলে কোনো যুবক চাকরি পাবেন না, এমন কি শান্তিতেও থাকতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত লড়াই শুরু হবে। এখন একটাই লক্ষ্য সরকারের পতন। এজন্য দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়েই দুর্বার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সরকারকে পরাজিত করা হবে।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কোনো শর্ত দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে না ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন— আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসে আছেন। আপনাদের পদত্যাগ করতে হবে আগে। কারণ আপনারা অবৈধ। আপনাদের মুখে রাম নাম মানায় না। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে দেশ চালাচ্ছেন।

ফখরুল বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করছে বিরোধীদলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। অন্যদিকে বিচারালয় ব্যবহার করে মিথ্যা সাজানো মামলায় দণ্ড দেওয়া হচ্ছে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের।

ফখরুল বলেন, জোর করে প্রশাসনকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য করছে সরকার। আর যেসব বিচারকেরা মিথ্যা মামলায় সাজা দিচ্ছেন, তাদেরও জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

সংবিধান চোর বর্তমান সরকারের কোনো ক্ষমা নেই জানিয়েছে মির্জা ফখরুল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি টিম এসেছিল। এ দলটি কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দল নয়, এটি সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি টিম। তারা এসেছিল, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে কি না, এটা যাচাই এবং বাংলাদশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষণে বড় কোনো টিম পাঠাবে কি না, এ হলো তাদের উদ্দেশ্য। তারা বাংলাদেশের সব নির্বাচনী স্টেক হোল্ডা- রাজনীতিক দল, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, সরকার সবার সঙ্গে কথা বলেছেন, আলোচনা করেছেন। তারা পাঁচটি সুপারিশ দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সংলাপের কথা।

সরকারকে প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সরকারে বসে আছেন? সেটি সাংবিধানিকভাবে বৈধ, এটা প্রমাণ করতে হবে। আমি প্রমাণ করেছি আপনারা সাংবিধানিকভাবে অবৈধ।

আজকের সমাবেশকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকের এ সমাবেশ সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সমাবেশ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হতে যাচ্ছে, নিঃসন্দেহ অনেক শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আমাদের একটাই লক্ষ্য এখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বুকের ওপর যে জগদ্দল পাথর চেপে আছে, তাদের সরাতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা স্লোগানে ভোট চোর চোর বলি না? এরা ভোট চোরের চেয়ে বড় হলো, এরা সংবিধান চোর। এদের কোনো ক্ষমা নেই।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.