ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইউনিট বরাদ্দ

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসা ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড এর যোগ্য বিনিয়োগকারী (Eligible Investor) ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে।

সোমবার (৯ অক্টোবর)  ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম (ইএসএস) এর মাধ্যমে এলিজেবল ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইউনিট বরাদ্দ করা হয়। রাজধানীর নিকুঞ্জে অবস্থিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান কার্যালয় ডিএসই টাওয়ারে লিস্টিং হলরুমে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

এ অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, সিপিএ,  প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. মাহফুজুর রহমান, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সুমিত পাল, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিনিয়র অফিসার তানিয়া বেগম, সিডিবিএল এর জেনারেল ম্যানেজার রকিবুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
পরবর্তীতে ডিএসই’র লিস্টিং ডিপার্টমেন্টের হেড মোঃ রবিউল ইসলাম এবং এমআইএস ও ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হেড মোঃ কামরুজ্জামান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০ কোটি টাকার ইউনিট সংক্ষিত ছিল। এর বিপরীতে বিপরীতে ৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকার ইউনিট কেনার জন্য আবেদন জমা পড়ে। সংক্ষিত ইউনিট সংখ্যার চেয়ে কম আবেদন জমা পড়ায় প্রত্যেক আবেদনকারী শতভাগ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছেন।

গত ১৪ আগস্ট পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তার ৮৮০তম কমিশন সভায় ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের প্রসপেক্টাস অনুমোদন করে। ফান্ডটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। আর এর ট্রাস্টি ও কাস্টোডিয়ানের দায়িত্ব পালন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবি।

প্রাথমিকভাবে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০০ কোটি টাকা। ফান্ডটির উদ্যোক্তা (Sponsor) এতে ১০০ কোটি টাকা জোগান দিয়েছেন। বাকী ১০০ কোটি টাকা আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু আইপিওতে নির্ধারিত ইউনিট বিক্রি না হওয়ায় ফান্ডটির আকার দাঁড়িয়েছে ১৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

আইপিওতে শতভাগ সাবস্ক্রিপশন না হলেও তাতে স্টক এক্সচেঞ্জে ফান্ডটির তালিকাভুক্তি ও কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো সমস্যা হবে না। কারণ মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা অনুসারে, প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ অর্জন হলেই ওই ফান্ড পরিচালনা ও তালিকাভুক্তির যোগ্যতা অর্জন করে। ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসান রহমান অর্থসূচককে বলেন, ‘আইপিও প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারের গতি অনেকটাই ধীর। অনেক বিনিয়োগকারী আরেকটু অপেক্ষা করে, পরিস্থিতি দেখেশুনে বিনিয়োগ করার পক্ষে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ে অনেক ব্যাংক তাদের বন্ডের সাবস্ক্রিপশন শেষ করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যে অসংখ্য বিনিয়োগকারী আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন। তাদেরকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা আমাদের অন্য ফান্ডগুলোর মত নতুন এই ফান্ডেও বিনিয়োগকারীদেরকে সর্বোচ্চ রিটার্ন দেওয়ার চেষ্টা করবো।’

তিনি তাদের উপর আস্থা রেখে ফান্ডটির অনুমোদন দেওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকেও ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর যে ঘাটতি রয়েছে, মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমেই কেবল সেটি পূরণ করা সম্ভব। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে কমিশন মিউচুয়াল ফান্ড শিল্পকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে এই খাতের বিকাশে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। এতে আগামী দিনে আমাদের পুঁজিবাজারে অনেক বেশি স্থিতিশীল ও গতিময় হবে বলে আমার বিশ্বাস।

উল্লেখ, বর্তমানে ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট তিনটি বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড (Open-end Mutual Fund) পরিচালনা করছে। ফান্ডগুলো হচ্ছে-ক্যাপিটেক পদ্মা পিএফ শরীয়াহ ইউনিট ফান্ড, ক্যাপিটেক পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড ও ক্যাপিটেক-আইবিবিএল শরীয়াহ মিউচুয়াল ফান্ড। তিনটি ফান্ডই ভাল লভ্যাংশ দিয়ে যাচ্ছে।

ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড আকারে অন্য কোম্পানিটি পরিচালিত অন্য ফান্ডগুলোর চেয়ে বড়। অন্যদিকে তালিকাভুক্ত হলে এটি হবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দ্বিতীয় বৃহত্তম ফান্ড। বর্তমানে সবচেয়ে বড় ফান্ড হচ্ছে-ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। এর আকার হচ্ছে ৭৭৬ কোটি টাকা। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর বাজারকে সাপোর্ট দিতে সরকারের উদ্যোগে এই ফান্ডটি গঠিত হয়।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.