মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা, ইশতিয়াক গ্রেপ্তার

ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (৪ অক্টোবর) আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর সন্ধ্যায় তাকে মোহাম্মদপুর খিলজি রোড থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুল হক ভূঞা বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৯ জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবি পুলিশ।

সম্পূরক অভিযোগপত্রে উল্লিখিত আসামিরা হলেন ইশতিয়াক মাহমুদ, নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খাঁন কাজল, সিয়াম ও অলি আহমেদ ওরফে জনি।

ওসি বলেন, আজ মামলাটির প্রতিবেদন আমলে নিয়েছেন আদালত। পরে আদালত ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইশতিয়াক মাহমুদকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

গত ১ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত এ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৮ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সর্বশেষ গত ৪ ডিসেম্বর এ মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে দেখা যায়, এদের মধ্যে সাক্ষী ড. বদিউল আলম মজুমদার, খুশি বেগম ও মাহবুবুল আলম মজুমদার তাদের জবানবন্দিতে জনৈক ইশতিয়াক মাহমুদের নাম উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে গত ২৭ ডিসেম্বর আদালত এ মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায় থেকে উত্তোলন করে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য ঢাকার সিএমএম বরাবর প্রেরণ করেন।

মার্সা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আব্দুর রউফ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাড়িতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাটের বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন করেন। ওই রাতে নৈশভোজের নামে তিনি গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে খবর পায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।

এরপর আনুমানিক রাত ১১টায় ছাত্রলীগের নাইমুল হাসান ওরফে রাসেলের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের একটি দল ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা মার্সা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে রাষ্ট্রদূত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। দলটি বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে বদিউল আলম, তার স্ত্রী ও ছেলেকে ছেলে মাহবুব মজুমদারকে জীবননাশের হুমকি দেন। মাহবুবকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন। বাড়ির প্রধান গেট ধাক্কাধাক্কি করে, ভয়-ভীতি দেখিয়ে তারা চলে যান।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.