এটিএম বুথের লেনদেনে চরম ভাটা

এটিএম বুথের ব্যবহার দেশের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে চলছে এটিএম বুথ। প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি উত্তোলন হতো এটিএম বুথ থেকে। তবে হঠাৎ করে গত জুলাই মাসে এটিএম বুথের লেনদেনে চরম ভাটা পড়েছে। জুন মাসের চেয়ে জুলাইয়ে লেনদেন কমেছে ৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন এমন তথ্য উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাসে এটিএম বুথ থেকে উত্তোলন করা হয় ৩৩ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। পরের মাসে অর্থাৎ জুলাইয়ে উত্তোলন করা হয় ২৪ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এছাড়া জুন পর্যন্ত এক বছরে এটিএম থেকে উত্তোলন হয়েছিলো ৩ লাখ ৬২ হাজার ৬০ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মানুষের জীবনযাত্রা আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। এটিএম বুথ থেকে মানুষ সহজে টাকা উঠাতে পারছেন। এছাড়া সিআরএম বুথে মানুষ এখন টাকা জমা ও উত্তোলন দুই-ই করতে পারছে। এতে সময় বেঁচে যাচ্ছে। ব্যাংকের কাজও কমছে। তাঁদের জনবল নিয়োগের খরচও কমছে। তবে দেশে মূল্যস্ফীতির উর্ধ্বগতি ও কিছুটা আর্থিক অস্থিরতা চলছে। এসবের প্রভাব জুলাইয়ের লেনদেনে পড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

একইভাবে জুলাইয়ে পয়েন্ট অব সেলসে (পিওএস) লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ৪৭ কোটি টাকা। পিওএসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিলো ২ হাজার ৯২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। জুলাইয়ে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকায়।

একইভাবে মেশিনে টাকা জমা দেওয়ার (সিআরএম) পরিমাণও বেশ কমেছে। সিআরএম মেশিনে জুলাইয়ে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এর আগের মাসে যার পরিমাণ ছিলো ১০ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে এই মাধ্যমে টাকা জমার পরিমাণ কমেছে ১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা।

তবে এই সময়ে ঘরে বসে কার্ড বা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ই-কমার্স লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। জুনে ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছিলো ১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। জুলাইয়ে লেনদেন বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৪২৭ কোটি টাকায়। এই সময়ের মধ্যে লেনদেন বেড়েছে ৩৫ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত অর্থবছর শেষে দেশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা এটিএম সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭২৫টি। জুলাইয়ে এটিএমে মোট ২ কোটি ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৯৫টি লেনদেন হয়েছিলো। এছাড়া ১ লাখ ৬ হাজার ৮৩২টি পয়েন্ট অব সেলসে ৫৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৮টি লেনদেন, ৩ হাজার ৫১৭টি সিআরএমে ৭ লাখ ২৩ হাজার ২৫৫টি লেনদেন হয়।

অর্থসূচক/এমএইচ

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.