লিবিয়ায় ভয়াবহ বন্যা: নিহত ১১ হাজার ৩০০, নিখোঁজ ১০ হাজার

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার দেরনা শহরে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩০০ জনে। এছাড়া বন্যার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১০ হাজারের বেশি মানুষ। নিখোঁজ এসব হাজারও মানুষের খোঁজে মরিয়া হয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিবিয়ার উপকূলীয় শহর দেরনায় ভয়াবহ বন্যার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ৩০০ জনে পৌঁছেছে বলে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে দুটি বাঁধ ভেঙ্গে সুনামির মতো ব্যাপক বন্যার পরে নিখোঁজদের অনুসন্ধানেও জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আন্তর্জাতিক এই সাহায্য গোষ্ঠীর সেক্রেটারি-জেনারেল মারি এল-ড্রেস ফোনে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ভূমধ্যসাগরীয় এই শহরে আরও ১০ হাজার ১০০ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। লিবিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এর আগে দেরনায় মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৫ হাজার বলেছিল।

এছাড়া ঝড় ড্যানিয়েলের আঘাতে উত্তর আফ্রিকার এই দেশের অন্যত্র প্রায় ১৭০ জন নিহত হয়েছেন।

এর আগে গত রোববার অস্বাভাবিক শক্তিশালী ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েল পূর্ব লিবিয়াজুড়ে বিস্তৃত এলাকায় মারাত্মক বন্যার সৃষ্টি করে, তবে ওই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় দেরনা শহরটি। রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড়টি যখন উপকূলে আঘাত হানে তখন বাসিন্দারা শহরের বাইরের দুটি বাঁধ ভেঙে পড়ার বিকট বিস্ফোরণের শব্দও শুনতে পেয়েছিলেন।

আর এরপরই বন্যার পানি সুনামির মতো শহরে প্রবেশ করে এবং বহু ভবন বিধ্বস্ত করাসহ হাজার হাজার মানুষকে সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দেরনায় যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগই এড়ানো যেত। ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের প্রধান পেটেরি তালাস জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘যদি স্বাভাবিক কোনও অপারেটিং আবহাওয়া পরিষেবা থাকতো, তাহলে তারা সতর্কতা জারি করতে পারতো। আর সেটি হলে জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হতো।’

পূর্ব লিবিয়ার কর্মকর্তারা আসন্ন ঝড় সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্ক করেছিলেন এবং গত শনিবার তারা সমুদ্র থেকে ঢেউয়ের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে কোনও সতর্কতা ছিল না।

বন্যায় বিপর্যস্ত দেরনার মেয়র আব্দুলমেনাম আল-ঘাইতি সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সুনামি সদৃশ এ বন্যায় যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটির ওপর ভিত্তি করে তারা ধারণা করছেন, মৃতের সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ হাজার হতে পারে।

অরথসুচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.