‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি লাভ করতে পারে চাইনিজ কোম্পানি’

চাইনিজ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে বেশি লাভ করতে পারে। পাশাপাশি তাদের জন্য এখানে ঝুঁকিও অনেক কম বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন (ইআরডি) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ.এইচ.এম জাহাঙ্গীর।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) আয়োজনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, চীন ও বাংলাদেশের এই সহযোগিতার সম্পর্ক অনেক দিন আগের। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা চাইনিজ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তখন আমারও সেখানে থাকার সুযোগ হয়েছিলো। সেই সময়ের বেশ কিছু নতুন চুক্তি হয়েছিলো। দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং টানেল নির্মাণে চায়নার বহু কোম্পানি জড়িত। একইভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণেও তারা জড়িত ছিলো। আমি অনেক চায়না প্রকল্পে ভিজিট করেছি। তারা সবক্ষেত্রেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পাবলিক পার্টনারশিপ অথরিটির স্পেশালিষ্ট এ.এম আল-আমিন বলেন, চায়নার বিভিন্ন ব্যাংক দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রাখছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বেশ কিছু হাইওয়ে ও ব্রিজ তৈরিতেও তাদের অবদান রয়েছে।

বিকেএমইএ’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বাংলাদেশের অনেক অবকাঠামো খাতে চায়নার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ইনভেস্টমেন্ট, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং টেকনোলজি সাপোর্ট দিচ্ছে। আরএমজি খাতে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি।

বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটির চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী মোহাম্মদ ফেরদাউস বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি হয়েছে। এতে চায়নার বেশ কিছু ইঞ্জিনিয়ার কাজ করেছেন। কর্ণফুলী টানেলেও তাদের অনেক অবদান রয়েছে। এরকম নতুন নতুন অলেক প্রকল্পের কাজ শেষের দিকে রয়েছে।

বিসিসিসিআই’র সেক্রেটারি আল মামুন মৃধা বলেন, দেশের বিভিন্ন খাতে চায়নার কোম্পানির অবদান রয়েছে। চায়না বাংলাদেশের বিশ্বস্ত সঙ্গী। ভবিষ্যতেও একসঙ্গে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

এসআলম গ্রুপের এডভাইসর এএসএম আলমগীর কবির বলেন, দেশের পাওয়ার খাতের উন্নয়নে সবক্ষেত্রেই চায়নার কোম্পানিগুলো অবদান রেখেছে। এসআলম গ্রুপ দেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে কাজ করছে। স্টীল, সিমেন্ট, ফাইন্যান্স, ব্যাংক, রিয়েল এস্টেট এবং বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে এই গ্রুপটি কাজ করে যাচ্ছে। চায়নার কোম্পানিগুলোর সাথে দেশের যেসব কোম্পানি কাজ করছেন, তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।

পাওয়ারভিশন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুজিবুর রহমান বলেন, ২০১০ সালের আগে প্রধানমন্ত্রী চায়নায় গিয়েছিলেন। তখন ৪৪৫ বাংলাদেশ ও চায়নার ব্যবসায়ীর একসঙ্গে একটি হোটেলে মিটিংয়ে বসেছিলেন। সেসময় অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছিলো। এরপর গত ১০ বছরে দেশের রোড, ব্রিজ ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক অবদান রেখেছে চায়নিজরা। এখন আমরা যে স্থানে এসেছি তাতে আমরা গর্বিত। সব ধরনের বড় প্রোজেক্টে চাইনিজ মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের মধ্যে এখনো বাংলাদেশে সবচেয়ে কম দামে শ্রমিক পাওয়া যায়।

এর আগে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) তিন দিনব্যাপী ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন-২০২৩’ এর উদ্বোধন করা হয়। আজ এ প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিন চলছে। প্রদর্শনী চলাকালে বিসিসিসিআই ও চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) যৌথভাবে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিক সেমিনার, দুই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির মেলা ও ব্যবসায়ী সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রদর্শনীতে ৬০টির বেশি স্টলে বিভিন্ন চীনা ও দেশী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

 

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.