মস্কোতে ড্রোন হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানির ভিন্নমত

বুধবার মস্কোর বাণিজ্যিক এলাকায় আবার ড্রোন হামলা হয়েছে বলে রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷ এই নিয়ে পর পর ছয় দিন ধরে রাশিয়ার রাজধানী এলাকায় এমন হামলার খবর পাওয়া গেল৷ ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাব হিসেবে কিয়েভ এমন পালটা হামলা চালাচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ তবে ইউক্রেন সরাসরি সে বিষয়ে মন্তব্য করছে না৷

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বুধবার দুটি ড্রোন ধ্বংস করেছে৷ তৃতীয়টি ‘চাপের মুখে’ ক্রেমলিনের পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে একটি ভবনের উপর আছড়ে পড়েছে৷ তবে হতাহতের কোনো খবর নেই৷ রাশিয়ার ইজভেস্তিয়া সংবাদপত্র টেলিগ্রাম চ্যানেলে সেই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে৷

রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনের প্রতিরোধের অধিকার সম্পর্কে পশ্চিমা জগতে কোনো সংশয় না থাকলেও সরাসরি রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলার বিষয়ে অস্বস্তি কাজ করছে৷ তবে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে খোলাখুলি ইউক্রেনের এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আক্রান্ত দেশ হিসেবে ইউক্রেন আত্মরক্ষার তাগিদে এমন হামলা চালাতেই পারে৷ রাশিয়া- যেভাবে ইউক্রেনের নিরীহ মানুষ, অবকাঠামো থেকে শুরু করে শস্যভাণ্ডারের উপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, বেয়ারবক সেই পদক্ষেপেরও নিন্দা করেন৷

মার্কিন প্রশাসন অবশ্য রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনের হামলা সম্পর্কে অস্বস্তি জানিয়েছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, আমেরিকা মোটেই এই কাজে উৎসাহ বা মদত দিচ্ছে না৷ তবে রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে কীভাবে প্রতিরোধ করবে, সেই সিদ্ধান্ত একমাত্র ইউক্রেনই নিতে পারে৷ তাঁর মতে, যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেন থেকে সরে গিয়ে রাশিয়া এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে৷ উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রাশিয়ার হামলার মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে বিশাল সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে আসছে৷ ন্যাটো ও অন্যান্য কাঠামোর মধ্যে সে দেশের জন্য সমর্থন ও সহায়তার ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিচ্ছে ওয়াশিংটন৷

কৃষ্ণ সাগরেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের জোরালো সংঘাত ঘটছে৷ রাশিয়া দাবি করেছে, যে সে দেশের সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের দুটি সামরিক নৌকা ধ্বংস করেছে৷ একটিতে ইউক্রেনীয় সৈন্যও ছিল৷ যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দুটি ড্রোন অকেজো করা হয়েছে বলেও মস্কো দাবি করছে৷ কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার অবরোধ সত্ত্বেও এই প্রথম ইউক্রেন থেকে একটি পণ্যবাহী বেসামরিক জাহাজ সম্প্রতি ইস্তানবুলে পৌঁছানোর পর সংঘাত আরো জোরালো হচ্ছে৷ গত জুলাই মাসে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় খাদ্যশস্য রপ্তানি সংক্রান্ত চুক্তি থেকে রাশিয়া সরে আসার পর গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.