‘বিনিয়োগকারীরা কি জন্য বিনিয়োগ করেন কোম্পানিগুলো তা ভুলে যায়’

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিগুলোতে কি জন্য বিনিয়োগ করেন কোম্পানিগুলো তা ভুলে যায়৷ তারা টাকা নেয় আর বোনাস শেয়ার দিতে থাকে প্রতি বছর। বোনাস শেয়ার ইস্যু করার ফলে পেইড আপ ক্যাপিটাল বাড়তে থাকে। আর পেইড আপ ক্যাপিটাল বাড়তে থাকায় কোম্পানি তার সক্ষমতা হারায়৷

তিনি বলেন, লাভ হয় ২০ কোটি টাকা, পেইড আপ ক্যাপিটাল ৮০০ কোটি টাকা। কিভাবে এমন একটি প্রতিষ্ঠান ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিবে। এগুলোই চলছে এ দেশে বছরের পর বছর। আর এখন সেসব কোম্পানি তাদের লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়েছে। তাই তারা বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে চলেছে। যা একধরনের প্রতারণা।

রোববার (১৪ মে) ঢাকা ক্লাবে ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) আয়োজিত ‘ সাংগঠনিক স্থায়ীত্ব রক্ষায় চার্টার্ড/ কোম্পানি সেক্রেটারিদের ভূমিকা (Organizational sustainability: role of Chartered/Company secretary) শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানের স্থায়ীত্ব নতুন বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি স্বচ্ছ এবং নিরাপদ বিনিয়োগের যায়গা প্রয়োজন। যেখানে কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদেরকে নির্ভুল এবং সঠিক তথ্য প্রদান করবে। বিনিয়োগকারীদের ভালো রিটার্ন দেবে।

এ সময় আইসিএসবির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এম নুরুল আলম এফসিএর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) প্রেসিডেন্ট আনিস উদ দৌলা এবং দ্যা ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)-এর প্রেসিডেন্ট নাসের এজাজ বিজয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আনিস উদ দৌলা বলেন, কর্পোরেট সেক্টরের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য আইসিএসবির সাথে আরও ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবে বিএপিএলসি। দেশে একটি সুন্দর ব্যবসায়িক পরিবেশ রয়েছে। চার্টার্ড সেক্রেটারিরা কর্পোরেট সেক্টরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা বাংলাদেশের উন্নতির জন্য প্রভাবক ও সহায়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। চার্টার্ড সেক্রেটারিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কারণে কোম্পানিগুলো প্রযুক্তিগত এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

এছাড়াও সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর মোহাম্মদ আলমগীর, বিকাশের চিফ হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌস ইউসুফ, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রধান মনজুরুল আলম এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার, কোম্পানি সেক্রেটারি ও এইচআর বিভাগের প্রধান মো. আসাদুর রহমান, এফসিএস।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে আইসিএসবির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ এলএলএম, এফসিএস সকলকে সেমিনারে যোগদানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই ধরনের সেমিনারের মাধ্যমে বিভিন্ন করপোরেট হাউসের মানব সম্পদ প্রফেশনালরা প্রাতিষ্ঠানিক স্থায়িত্বে চার্টার্ড সেক্রেটারিদের ভূমিকা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং গুরুত্ব জানতে পারবেন। চার্টার্ড/কোম্পানি সেক্রেটারিগণ করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি এবং সুশাসনের ধারাবাহিকতা সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী এবং কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বিশ্বব্যাপী কোম্পানি সেক্রেটারিকে একটি কোম্পানির চীফ গভর্নেন্স অফিসারও বলা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.