আইএমএফের দেওয়া রিজার্ভের শর্ত পূরণে শঙ্কা

আগামী জুনের মধ্যে সম্ভাব্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ঋণের অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে জুনের মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ অন্তত ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারে রাখতে হবে। তবে সেই শর্ত পূরণে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে ৩ হাজার ৯৩ কোটি ডলার। চলতি সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল ১১২ কোটি ডলার পরিশোধ করার কথা রয়েছে। এতে দেশের রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ২ হাজার ৯৮১ কোটি ডলারে।

অবশ্য আইএমএফ এ পদ্ধতি মানে না। কারণ রিজার্ভের অর্থে বিদেশে বিভিন্ন বন্ড, মুদ্রা ও স্বর্ণে বিনিয়োগ; রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন; বাংলাদেশ বিমানকে উড়োজাহাজ কিনতে সোনালী ব্যাংককে ধার; পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের খনন কর্মসূচিতে অর্থ দেওয়া এবং শ্রীলঙ্কাকে অর্থ ধার দেওয়া বাবদ খরচ ৮২০ কোটি ডলার রয়েছে। আইএমএফ এগুলো বাদ দিতে বলেছে। এর ফলে প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দাঁড়াবে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার।

এদিকে বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণ অনুমোদনে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে একটি শর্ত হলো জুনের মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ অন্তত ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারে রাখতে হবে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাকি আছে আর ১ মাস ২৫ দিন। এ সময়ের মধ্যে রিজার্ভকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিতে ২৮৫ কোটি ডলারের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে প্রতি মাসে গড়ে এক লাখের বেশি বাংলাদেশি বিদেশে যাচ্ছেন। কিন্তু ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে বৈধ পথে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৭৭১ কোটি ডলার। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে এক ডলারের বিনিময়ে ১০৭ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম অনেক বেশি। এরফলে প্রবাসীদের কাছে হুন্ডি অনেক বেশি জনপ্রিয়।

করোনার সময় হুন্ডি ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে ২০২০-২১ অর্থবছরে বৈধ পথে দেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল। একইসময়ে রিজার্ভও পৌঁছে গিয়েছিল সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ায় পরের অর্থবছরে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানো আবার চাঙা হয়ে ওঠে।

 

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.