লক্ষ্যমাত্রার নিচে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাস (জুলাই-মার্চ) লক্ষ্যমাত্রার নিচে অবস্থান করছে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি। খাতটিতে ধারাবাহিকভাবে ঋণ বিতরণ কমছে। মার্চে এই খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। কিন্তু মার্চ শেষে এই প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে। আগের মাস ফেব্রুয়ারি শেষে যা ছিলো ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ।

আর্থিক সংকটের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এসবের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে, ডলার সংকট বেশ ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। এ সংকট সমাধানে সরকার রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করছে। এতে রিজার্ভের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। চলতি সপ্তাহে আকু বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমে আসবে ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ডে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ আরও কমে দাঁড়াবে ২৩ বিলিয়ন ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ১২ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা।

তথ্য মতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিলো ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগস্টে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশে। তবে সেপ্টেম্বরে ঋণের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে আবার ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয় ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ করে। বেসরকারি খাতের ঋণের এই প্রবৃদ্ধি ডিসেম্বরে আরও কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এই খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ১২ দশমিক ৬২ শতাংশে এবং ফেব্রুয়ারিতে কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ১৪ শতাংশে। তবে এরপরের মাস মার্চে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে।

সাধারণভাবে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে থাকে। তবে ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথমবারের মতো তা নেমে যায় ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। করোনার প্রভাব শুরুর পর ব্যাপক হারে কমে গিয়ে ২০২০ সালের মে মাস শেষে প্রবৃদ্ধি নামে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। তবে পরের মাস জুন থেকে তা অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.