দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন কে?

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আজ

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন আজ। রোববার বিকেল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে।

ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ১২ ফেব্রুয়ারি (রোববার) বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কার্যালয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।’

১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।

সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার। বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাষ্ট্রপতি পদে একজন প্রার্থী হলে, নির্বাচনের জন্য সংসদের সভা বা ভোটের প্রয়োজন হবে না।

এদিকে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে পদটি শূন্য হলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের নব্বই দিন থেকে ষাট দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। সংবিধানের এই সকল বিধানের আলোকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে ২৪ জানুয়ারি। আর ভোটগ্রহণ করতে হবে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।

২০১৮ সালে সর্বশেষ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল ওই বছর ২৫ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র বাছাই ছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি এবং ভোটগ্রহণের সময় রাখা হয়েছি ১৮ ফেব্রুয়ারি। সে সময় ২২ দিনের মধ্যে পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে সে সময় বর্তমান রাষ্ট্রপতি একক প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থক হতে হয়। আর সংসদ সদস্যরাই এই নির্বাচনের ভোটার। বর্তমান সংসদে সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এজন্য এই দল থেকে যে প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে, তিনিই নির্বাচিত হবেন বলে ধরে নেওয়া যায়। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী না থাকলে রোববারই জানা যাবে কে হচ্ছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। তবে আইনি বাধ্যবাধকতা অনুসারে একক প্রার্থী থাকলে এবং তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষিত হবেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ থেকে মো. আবদুল হামিদ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর ২০ মার্চ রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে মো আবদুল হামিদ সেদিন থেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২২ এপ্রিল তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

এরপর ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের নব্বই থেকে ষাট দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। ফলে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। স্বাধীনতার পর থেকে ২০ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দুই মেয়াদে রয়েছেন। সেই হিসোবে নতুন রাষ্ট্রপতি এই পদে অষ্টাদশ ব্যক্তি।

সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবার সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

 

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.