নানা উদ্যোগেও কাটছে না ডলার সংকট

সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও চলছে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট। গত বছরের শুরু থেকে দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়। সংকট কাটাতে নানা উদ্যোগ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এরমধ্যে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশে প্রবাসীরা ১ হাজার ২৪৫ কোটি ২১ লাখ ডলার পাঠায়। সংকট সমাধানের লক্ষ্যে একই সময়ে রিজার্ভ থেকে ৯২০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়। এরপরেও কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিলো ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এরপরের মাস অর্থাৎ আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা চার মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই ছিল রেমিট্যান্সের প্রবাহ। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। অক্টোবরে আসে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।

এরইমধ্যে ডলার সংকট কাটাতে নানা উদ্যোগ নেয় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকটায় সংকট মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আলোচ্য এই সময়ে অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রিজার্ভ থেকে বিক্রি হয় ৯২০ কোটি ডলার। এরপরেও কাটছে না ডলারের এই সংকট।

এর আগে গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন বা ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এই অর্থবছরে প্রবাসীরা ডলার পাঠিয়েছিলো ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার।

এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিলো।

এদিকে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে ১০১ টাকা দরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে প্রতি ডলারের জন্য ১০০ টাকা নেওয়া হতো। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে প্রতি ডলার ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল, যেটা ছিল রিজার্ভ থেকে বিক্রির সর্বোচ্চ দর।

এছাড়া সম্প্রতি বাড়ানো হয় রপ্তানিকারকদের জন্য ডলারের দাম। নতুন এ দামের ফলে এখন থেকে রপ্তানিকারকেরা প্রতি ডলারের বিপরীতে পাচ্ছেন ১০৩ টাকা। এর আগে এই দর ছিল ১০২ টাকা।

দেশের ডলার সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ডলার কারাসাজি রোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাজাধানীর মানি চেঞ্জার ও ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন করতে দেখা গেছে। এরপরে ব্যাংক ও খুচরা বাজারে ডলারের দাম কিছুটা কমতে থাকে। এরপরেও সংকট কাটানোর ফল পুরোপুরি পাওয়া যায়নি।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.