৭ বছরেও ফেরত পাওয়া যায়নি রিজার্ভ চুরির ডলার

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির সাত বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ এক হাজার ৬২৩ মার্কিন ডলার চুরি করা হয়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো দুই কোটি ডলার ফেরত পায় বাংলাদেশ। বাকি আট কোটির বেশি ডলার ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়। এসব অর্থ এখনো ফেরত পায়নি বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির বিষয়টি নিয়ে আমরা কোনো কথা বলবো না। এটি এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পার্ট না। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখবেন।

এদিকে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত পাঠাতে ফিলিপাইন সমঝোতায় না বসার ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে অর্থ ফেরত পেতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করতে হবে।

এর আগে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক হ্যাকার চক্র সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ এক হাজার ৬২৩ মার্কিন ডলার চুরি করে। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো দুই কোটি ডলার ফেরত পায় বাংলাদেশ। তবে বাকি আট কোটির বেশি ডলার ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়। এসব অর্থ এখনো ফেরত পায়নি বাংলাদেশ।

এরপরে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ওই অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটান সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করে বাংলাদেশ। মামলায় ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক, ডলার পেসোতে রূপান্তর করতে ব্যবহার করা ক্যাসিনোর মালিক কিম অংসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়। তবে মামলার পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে ম্যানহাটন সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জানিয়ে দেন, মামলাটি তাঁদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এরপর বাংলাদেশ ২০২০ সালের ২৭ মে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট কোর্টে মামলা করে।

এদিকে সম্প্রতি আদালত সমঝোতার নির্দেশ দেয়। এরপরে গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস সহ একটি প্রতিনিধিদল ফিলিপাইনে যায়। প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন, আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, বিএফআইইউর ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের দুজন করে কর্মকর্তা।

জানা যায়, প্রতিনিধিদল ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস ও বার্নাস ল অফিসের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এছাড়া শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এই তিন পক্ষের সঙ্গে একটি সমন্বয়সভা হয় বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে দেশটির মান্ডলুয়ং, মাকাতি ও প্যারানাক শহরের তিনটি আঞ্চলিক বিচারিক আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। আর যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের মামলা চালানোর জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা করছে আইনি প্রতিষ্ঠান কোজেন ও’কনর।

 

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.