ক্ষুদ্রঋণ খাতে ডিজিটাল ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট সল্যুশন নিয়ে ব্র্যাক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
চুক্তির আওতায়, ব্র্যাকের অধীনস্থ ২,৮০০টি ক্ষুদ্রঋণ শাখা অফিস ডিজিটাল কালেকশন এবং পেমেন্ট করতে পারবে। প্রকল্পটি উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার একটি সহযোগিতামূলক উদ্যোগ এবং এটি ব্র্যাকের নগদ ব্যবস্থাপনা সহজতর করতে উপযুক্ত ও সম্পূর্ণ নতুন ধারার সমাধান প্রদান করবে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হেড অব ট্রান্সাকশন ব্যাংকিং লুৎফুল আরেফিন খান এবং ব্র্যাকের পক্ষ থেকে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আসিফ সালেহ এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
সেসময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয়; হেড অব ক্লায়েন্ট কভারেজ, কর্পোরেট, কমার্শিয়াল অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এনামুল হক; স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের আশিয়ান ও দক্ষিণ এশিয়া’র পাবলিক সেক্টর অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের রিজনাল হেড জেসন ভিং; ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স বাংলাদেশের সিনিয়র ডিরেক্টর অরিঞ্জয় ধর প্রমুখ।
বেসপোক সল্যুশন বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) এবং বাংলাদেশ রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (বিডি-আরটিজিএস) ব্যবহার করে ঋণ বিতরণে আধুনিকায়ন নিশ্চিত করে। এছাড়া, সম্পূর্ণ কালেকশন প্রোসেস সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় করতে ডাইরেক্ট ডেবিট ইনস্ট্রাকশন (ডিডিআই) ব্যবহৃত হয়।
ব্যাংকের স্ট্রেইট-টু-ব্যাংক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া এবং ঋণ সংগ্রহ নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয়। রিয়েল-টাইম ডেবিট-ক্রেডিট নোটিফিকেশন, তাত্ক্ষণিক অ্যাকাউন্ট রিকন্সিলিয়েশন, নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে সকল লেনদেন পরিচালনা এবং অন-ডিমান্ড কাস্টম রিপোর্টিং ব্র্যাককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা, গতিশীলতা এবং দৃশ্যমানতার সাথে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের অ্যাক্সেস প্রদান করে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “ডিজিটাল সমাধান এবং অটোমেশন বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শুধুমাত্র আমাদের ক্লায়েন্টদের ব্যবসায়িক এজেন্ডা পরিচালনার পাশাপাশি রেসিলিয়েন্ট ইকোনমিক গ্রোথ নিশ্চিত করতেও এটি বর্তমানে আবশ্যক। ব্র্যাকের সাথে এই অংশীদারিত্ব এবং ফ্লেক্সিবল ও ট্রান্সপারেন্ট সল্যুশন বাস্তবায়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত। একইসাথে ক্ষুদ্রঋণ স্পেসে বিপ্লব সাধনেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যা আয় বৈষম্য দূর করে, দারিদ্র্য হ্রাস করে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স বাংলাদেশের সিনিয়র ডিরেক্টর আসিফ সালেহ বলেন, “ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন ও ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন আমাদের সুবিধাভোগীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মূল চাবিকাঠি। ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্সে আমরা সুবিধাভোগীদের ডিজিটাল ইনক্লুশনের আওতায় এনেছি, যা তাদের নগদ অর্থনীতি থেকে ডিজিটাল অর্থনীতিতে যেতে সাহায্য করবে। আমরা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে আনন্দিত। এর মাধ্যমে আমাদের সুবিধাভোগীরা পেমেন্ট আদান-প্রদানে এক অনন্য অভিজ্ঞতা লাভ করবে, যা তাদের সময় সঞ্চয়ে সাহায্য করবে। একইসাথে এটি সকল প্রক্রিয়া অপ্টিমাইজ করতে, দক্ষতা বৃদ্ধিতে এবং কর্ম-জীবনের ভারসাম্য উন্নত করতেও সহায়তা করবে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন ক্ষুদ্রঋণ শিল্পে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতেও আমরা স্ট্যান্ডার্ড চার্টারর সাথে অংশীদারিত্বের অব্যাহত রাখতে আশাবাদী।”
দীর্ঘ ১১৭ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডই দেশের একমাত্র বহুজাতিক ব্যাংক। ২০০৯ সাল থেকে ব্যাংকটি গর্ভনর স্কলারশিপ প্রদান করে আসছে। এই পর্যন্ত ব্যাংক থেকে ৮১০ টিরও বেশি স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সাস্টেইনেবিলিটি এবং ইক্যুইটি প্রতিষ্ঠায় ব্যাংকটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ল্যান্ডমার্ক কমিউনিটি এনগেজমেন্ট প্রোগ্রাম ‘ফিউচারমেকারস বাই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড’ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিখতে, উপার্জন করতে এবং প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করছে।
অর্থসূচক / এইচএআই
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.